সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টুকরো লেখা এবং অন্যান্য / Bengali Prose


আমরা যে চলে যাব একদিন, কোথায় যেন চলে যেতে হবে সবাইকে একদিন! আমরা  নিশ্চিতভাবে জানি যে একদিন মরে যাব আমরা তাও কি করে জানি বুঝে নি, কি করে জানি ধরতে পেরে যাই কি সব, কি সব জিনিস, কি কি সব স্মৃতি যেন , কীভাবে যেন  চিরটাকাল  থাকবে, থেকে যাবে, কি করে বুঝে যাই এমনটা? 


যখন  পৃথিবীর কাজ ফুরোলে ছেড়ে চলে যায়, তার  শতাব্দীর ভাগ করা জীবন এবং ভালবাসা ভরা মানুষগুলোকে মাটি আর আকাশ আর বাতাসের কাছে গুছিয়ে রেখে; এক আলোকিত ইথারে যেন বিদায় জানায়, ফিসফিসিয়ে কি বলে ? কোথায় যাচ্ছ ? 


আমাদের বিশ্বাস যাই হোক না কেন, মনের এই অনুভূতিপ্রবণ দোলাচলে যখন বস্তুগত পূর্বাবস্থার মুহূর্তরা কাছে চলে আসতে থাকে- moment of material যাকে বলতে থাকি আমরা,  মানে তখন আরও কিছুক্ষন সময় মুঠোয় আছে যখন , ঠিক যে ক্ষণে মানবজীবন তার ভস্মজীবনের দোরের কাছে এসে দাঁড়ায়, তখন আমরা - আমরা কিছুক্ষনের, কিছুসময়ের এবং  পদার্থ দিয়ে তৈরী  প্রাণী আমরা, আমরা creature of moment and matters কিংবা anti matters - আমাদের ভিতরে চিন্তা এবং অনুভূতির মহাবিশ্বের মতো দুর্দান্ত কিছু কীভাবে যে শূন্যতায় বিলুপ্ত হতে পারে তা বোঝা যায় না। কিভাবে যে একটা nothingness এর মধ্যে vanish হয়ে যায়, তা ঠিক বুঝে উঠতে পারি না।


প্রত্যেকটি পৃথক অনু-পরমাণু, মানব শরীরের মধ্যে থেকে চক্রাকারে বায়ু, জল এবং মাটির মাধ্যমে আবর্তিত হয় , মানব জনম ধরে আবর্তিত হয়, মনের মধ্যে আবর্তিত হয়,  প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চক্রাকারে আবর্তিত হয়, পুনরাবৃত্তি করে,  এবং সংযোগ ঘটায় । একটি সম্পূর্ণ অংশ তৈরি করবে।  যদি স্মৃতি ছাড়া থাকে সেই অস্তিত্ব, তারা একটি স্মৃতি তৈরি করে নেয়।  অস্থায়ী হলে তারা স্থায়ীত্ব তৈরি করে।  বিক্ষিপ্ত হলে তারা একটি সম্পূর্ণতা তৈরি করে।


নিঃসঙ্গ শহর এক: একা থাকার আর্ট নাকি এক অ্যাডভেঞ্চারের নাম । একাকীত্ব স্বীকার করা কঠিন; কোন শ্রেণীতে রাখব একে?  শ্রেণীভুক্ত করব একা থাকার সংজ্ঞা কে? নাকি একা থেকে যাবে একাকীত্বের অস্তিত্ব। আর তা যেন আরো কঠিন হয়ে পড়বে।  বিষণ্নতার মতো, এমন একটি সমান্তরাল অবস্থান যার সাথে  প্রায়ই এক ইন্টারসেকশন (intersection) বা ছেদ করে চলে একাকীত্বের যাবতীয় ধারণা, গভীরে চলে যেতে পারে, ঠিক যেভাবে কাপড়ের প্রত্যেকটি তন্তুর গভীরে চলে যেতে পারে এক তীক্ষ্ণ সুঁচের ফলা ।



এখানে আমরা, আপনি এবং আমি, আপনাদের পরিবার, আমাদের পরিবার পরিজন যারা  আছেন এবং যারা আর নেই—আমাদের প্রত্যেকে একটি সমগ্র সত্ত্বা, একেবারে মানে absolute vulnerable এবং একেবারে অবিনশ্বর কণা দিয়ে তৈরি । hungering তৈরী করে এই পরম মহাবিশ্বের জন্য, এই absolute relative universe এর জন্য, অবিরাম পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে চলা মহাবিশ্বে স্থায়ীত্বের জন্য hungering সৌন্দর্যের জন্য, অস্তিত্বের  জন্য ।


এই যে ক্ষুধা, এই যে জীবনের ক্ষুধা এই যে hunger for life আর তার  থেকে, বেঁচে থাকার , প্রত্যেকটি অনুষঙ্গের এই বৈপরীত্যগুলি থেকে, আমরা জীবনকে , প্রতিটি বেঁচে থাকার মুহূর্ত কে প্রাণবন্ত করে তুলতে থাকি। এমন সবকিছু তৈরি করি: আমাদের শিল্প এবং আমাদের সংগীত, আমাদের কবিতা এবং আমাদের গণিত, আমাদের উপন্যাস এবং আমাদের ভালবাসা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস বা মগ্নচৈতন্য / What is Stream of Consciousness?

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস ? সাহিত্য ধারায় এটি এক রীতি, বলতে গেলে লেখনীর এক ধরণ। সাহিত্যের আলোচনায়  কিংবা সমালোচনায় 'স্ট্রিম অফ কনসাসনেস'- ‘Stream of Consciousness’  বা মগ্নচৈতন্য শুধুমাত্র এক শব্দ নয়, এ এক অনন্য, এক স্বতন্ত্র জঁর  ।  মগ্নচৈতন্যের   স্রোত সাহিত্যসৃষ্টির এক অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন ধারা,  যা কিনা  বিংশ শতাব্দীর কিছু বিখ্যাত লেখক   নিযুক্ত এক স্বতন্ত্র লেখন রীতি। নিজেদের লেখনীতে কিছু ঘটনা পরম্পরাকে  বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছিলেন তারা ।  কিন্তু '  মগ্নচৈতন্য '  কী?  কেনই বা  এটি একটি 'ধারা' বা ' জঁর' ?  কিছু  পরিচিতি দিলাম বটে শুরুতে কয়েকটি শব্দকে আশ্রয় করে, তবে  বিস্তারিত আলোচনা  এগোবে আস্তে আস্তে।  এই আপাত সাধারণ এবং একইসঙ্গে ব্যাপকভাবে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা যুক্ত , সাহিত্যিক টার্মটির ধারণা  পরিষ্কার করতে সহায়তা করতে পারে হয়ত এই  আলোচনা ।   Image Courtesy: Steve Jhonson:pixels.com/free image প্রকৃতপক্ষে...

একটি প্রেমের গল্প : অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি / The love story of Amrita Pritam and Sahir Ludhianvi

প্রেমের গল্প। প্রেম ভাঙার গল্প। পাত্র-পাত্রী সাহির লুধিয়ানভি এবং অমৃতা প্রীতম। দিকপাল দুই সাহিত্যিক। কেমন ছিল সেই সম্পর্ক ? ''আমি তো জানতাম সাহির, তোমার কোনোদিনই আমার প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষার কোনো দায় ছিল না । কি যেন বলে আজকাল ! ও হ্যাঁ , কমিটমেন্ট ফোবিয়া।  ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে কি না সেই দ্বিধাতেই তো রয়ে গেলে। কেন  যেন মনে হয় আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা  সেই গভীরতর  অতলান্ত  স্পর্শ করে নি কোনোদিন। ছুঁয়ে দেখেনি সেই ভালোবাসার তীব্র টানকে। আচ্ছা সত্যি করে বলো তো, তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবেসেছ  ? যতটা আমি তোমাকে বেসেছি।  "ম্যায়নে টুট  কে প্যায়ার কিয়া তুম সে / ক্যায়া  তুমনে ভী উতনা কিয়া মুঝ সে?'' অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি : Image Courtesy : Indian Express  ' ''মোহাব্বত কি পরখ  কা  ইয়েহি  তো রাস্তা  হ্যায় / তেরি  তালাশ মে নিকলু, তুঝে  না  পায়ু  ম্যায় '' । অমৃতা ভালোবাসা খুঁজেছেন, সেই আকুল করা ভালোবাসা,  হৃদয় তন্ত্রীতে সেই তীব্র...

সুইজারল্যান্ডের আত্মহত্যার সহযোগী অনুমোদিত ডিভাইস /Switzerland Approves a Device for Assisted Suicide

  মৃত্যু সহায়তা কারী যন্ত্র। যন্ত্র তো মানুষকে জীবন দেয়। প্রাণ ও কেড়ে নেয় তা? সারকোফেগাস: Image Courtesy: wikimedia common একটি ক্যাপসুল, সাই-ফাই ফিল্ম থেকে বেরিয়ে  এসেছে, সবাই অবাক হয়ে দেখছে কিন্তু তা সুইজারল্যান্ডে রীতিমত বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।  বিতর্কের বিষয় স্বয়ং হাইবারনেশন সেলের মতো দেখতে এই যন্ত্র, যা কিছুটা স্পেস শিপের মতো দেখতে, তা আসলে মৃত্যুতে সহায়তা বা আত্মহত্যায় সহায়তা ( Assisted Suicide/ Assisted Death) করার একটি যন্ত্র।  দেশটি সম্প্রতি তার সহায়ক আত্মহত্যা আইনের পরিধির (Assisted Suicide Laws) অধীনে "কফিনের মতো ক্যাপসুল" - “Coffin-like Capsule” কে আইনি ছাড়পত্র দিয়েছে। এই যন্ত্র- মৃত্যুর প্রক্রিয়া কিছুটা এই প্রকার : সারকোফেগাসের ( sarcophagus ) সংক্ষিপ্ত "সারকো"- “sarco,” নামে ক্যাপসুলটি "দ্রুত এবং ব্যথাহীন" বা “quick and painless”  মৃত্যু নিশ্চিত করবে।  সারকো হাইপোক্সিয়ার (hypoxia) মাধ্যমে মৃত্যুকে প্ররোচিত করবে এই যন্ত্র; জীবনের শেষ দিনটিকে সুনিশ্চিত করার জন্য ক্যাপসুলটি নাইট্রোজেন  পূর্ণ করা হবে এবং অক্সিজেন সরবর...