সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিষয় যখন বর্তমান সময়ের সামাজিক এবং মানসিক সচেতনতা / Social And Psychological Issues In Recent Times

বাচ্চার মানসিক বিকাশের জন্য কোনটা জরুরি- খেলনা নাকি বেড়াতে যাওয়া/ Vacations or Toys which leads to Advanced Brain Development


বিষয় যখন বাচ্চার মানসিক বিকাশ


বাচ্চার মানসিক বিকাশের জন্য কোনটা জরুরি- খেলনা নাকি বেড়াতে যাওয়া ?/  Vacations or Toys which leads to Advanced Brain Development
Image Courtesy: Photo by RUN 4 FFWPU from Pexels


বেড়াতে যাওয়া - সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ 

আপনার কি সবসময় একটা চিন্তা থাকে যে এই এত্ত এত্ত খেলনা নিয়ে কি করবেন ? বাইরে কোথায় বেরোলেই বাচ্চা কি শুধু খেলনা কিনে দেবার জন্য বায়না করতে থাকে ? তাহলে একটা জিনিস একটু ভেবে দেখতে পারেন ? খেলনা গুলো আপনার শিশুর মানসিক বিকাশের যথাযত পরিপূরক তো ? এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা সবাই একমত যে একটি শিশুর বৌদ্ধিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য খেলনা নয় বেড়াতে যাওয়া অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিতে পালন করে। তারা পরামর্শ দিয়ে থাকেন একসঙ্গে ছুটি কাটানোর। অর্থাৎ সময় পেলেই একটা ছোট আউটিং হতে পারে অনেক রোগের মহৌষধি। আপনার সন্তানকে একটা ছুটির দিন উপহার দিন। 

শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা মার্গট  সান্ডারল্যান্ড এটাকে একটা ইনভেস্টমেন্ট বা  বিনিয়োগ হিসেবে দেখেন। একটা ছুটি আর সেই ছুটিতে বাচ্চাকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া - বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য খুব দরকার। কারণ নতুন নতুন জায়গায় যাওয়া  মানে বাচ্চা নতুন অনেক কিছু জিনিস দেখবে, তারা প্রশ্ন করতে শিখবে। এই নতুন অনেককিছু শিখবে, জানবে, নিজের মতো করে বুঝবারও চেষ্টা করবে। ডা মার্গট পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানো নিয়ে বৈজ্ঞানিক দিকটির উপর আলোকপাত করেছেন। পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটালে আসলে মানুষের মস্তিষ্কের লিম্বিক অঞ্চলে জিনগত যে দুটি ইনগ্রাইন্ড সিস্টেম  থাকে তার অনবরত চর্চা হতে থাকে। সাধারণত বাড়িতে এটির চর্চা করা সম্ভবপর হয় না। এই সিস্টেম গুলিকে বলে প্লে সিস্টেম (Play System ) এবং সিকিং সিস্টেম (Seeking System) . পৃথিবীর এক বিখ্যাত স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জাক পাঙ্কসিপ এই দুটি সিস্টেমের আবিষ্কর্তা। 

ভারী সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন ডা মার্গট  সান্ডারল্যান্ড এই সিস্টেমের। '' ধরুন আপনি আপনার সন্তানকে নিয়ে সমুদ্রের ধরে বেড়াতে গেলেন, সেখানে আপনার সন্তানের ছোট্ট পা বালির মধ্যে ডুবিয়ে দিতে থাকলেন, কিংবা ছোট্ট সন্তানের হাত ধরে প্রকৃতির মধ্যে ঘুরে বেড়ালেন তখনি মস্তিষ্কের প্লে সিস্টেম ( Play System ) এর কাজ শুরু হয়। আর  এটার বারবার ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের সিকিং সিস্টেম (Seeking System ) ও ব্যবহৃত হতে শুরু করে। তখন আপনার সন্তান আপনার সঙ্গেই সময় কাটাতে চাইবে, নতুন নতুন জিনিস দেখতে কিংবা শিখতে চাইবে আপনারই হাত ধরে। জঙ্গল বা সমুদ্র কিংবা দূরের কোনো ছোট্ট ছবির মতো পাহাড়ি গ্রাম,সন্তান যেতে চাইবে আপনারই সঙ্গে। 

প্লে সিস্টেম (Play System ) এবং সিকিং সিস্টেম (Seeking System) দুটির এই অবিরত চর্চার ফলে আপনার সন্তানের ফ্রন্টাল লোবে (Frontal Lobe ) এ  প্রভাব পরে। এই অংশের বিকাশ ঘটতে থাকে। মস্তিষ্কের এই অংশটির ক্রিয়াকলাপ  কিছু বিষয়ে ক্ষেত্র গুলিতে। যেমন- কোনো কিছু স্মৃতিতে ধরে রাখা , ভাষাচর্চা , কোনো কিছু সম্পর্কে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া , কোনোকিছু বুদ্ধি দিয়ে বিচার করা, সমস্যা= সমাধান , আবেগের বহিঃপ্রকাশ। এই সিস্টেমদুটির যত বেশি ব্যবহার হবে তত বেশি করে তা শক্তিশালী হয়ে উঠবে। 

সন্তানকে নিয়ে ছুটি কাটান, তারা নতুন জায়গা আবিষ্কার করবে, সুযোগ পাবে নতুন জায়গা দেখার , সেখানকার মানুষজন , সেখানকার নানা বৈচিত্র দেখার। সেগুলিকে বোঝার। সিকিং সিস্টেমকে (Seeking System ) কে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। আপনার জীবনে প্রচুর স্ট্রেস, অফিস সংক্রান্ত প্রচুর চাপ আছে আপনার। আপনার থেকে আপনার পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় এই অবিরত চাপ। প্রতিদিনকার একঘেয়েমি রুটিন। একটা ঘুরে আসা আপনাকে আপনার সন্তানের অনেক কাছাকাছি নিয়ে আসে। 

মন যখন খুশি 

আপনার বাচ্চার মানসিক এবং বৌদ্ধিক বিকাশ ছাড়াও প্লে সিস্টেম (Play System ) এবং সিকিং সিস্টেম (Seeking System) এর  একটা খুব গুরুত্ত্বপর্ন  ভূমিকা আহে। পারিবারিক ভ্রমণ গুলি সাধারণ ভাবে একটা খুশির আবহাওয়া নিয়ে আসে। অভ্যেস বজায় রাখাটা দরকার।  এই সিস্টেমদুটি সক্রিয় ভাবে কাজ করতে থাকে আমাদের মস্তিষ্কে তখন তিনটি হরমোন ( Neurochemicals) ডোপামিন (Dopamine) এবং অক্সিটোসিন ( Oxytocin) নিঃসরণ হতে শুরু করে। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয় এই হরমোনগুলো। চারপাশে একটা পজিটিভ পরিবেশ তৈরী করে।  বলতে গেলে একটা পজিটিভ ভাইব নিয়ে আসে। সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা অনুভূত হয়।                                                                                                                                       
২০১৭ সালে হওয়া একটা স্টাডি দেখিয়েছে, একসঙ্গে সময় কাটানোটাকেই  মানুষ সবচেয়ে বেশি উপভোগ করে থাকে। একে অন্যের সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত অনুভব করে মানুষ। ভালোবাসার কথা শুনতে ভালোবাসে সবাই। অনুভব করে নিজের গুরুত্ত্ব।  এই স্টাডি প্রকাশিত হয়েছিল The Journal of Social and Personal Relationships এ। এই স্টাডি হয়েছিল ৪৯৫ জন ১৮ থেকে ৯৩ বছর বয়সী পুরুষ আর মহিলার উপর।  প্রশ্নপত্র তৈরী করা হয়েছিল এই স্টাডি র জন্য। একটাই প্রশ্ন বিভিন্ন ভাবে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- কোন জিনিসটা তাদের মধ্যে ভালোবাসার বোধ তৈরী করে। মূল্যায়ন করা হয়েছিল তাদের প্রত্যেকের উত্তর। ৬০ টি প্রশ্ন ছিল প্রশ্নপত্রে আর সবকটি প্রশ্ন শুরু হয়েছে এই ভাবে ''বেশিরভাগ লোকেরা নিজেকে ভালোবাসার পাত্র বলে মনে করে যখন ...''.  
গবেষকরা দেখিয়েছেন , একজন মানুষ অন্য্ মানুষের সঙ্গে একাত্মবোধ করে যোগাযোগের মাধ্যমে। উপহারের আদান-প্রদ আসে অনেক পরে। আগে আসে মানুষটি অন্য্ মানুষের সঙ্গে কতটা একাত্মবোধ করে। একজন গবেষক ডা জিটা ওরাভেক্স বলেছেন,'' ছোটো ছোটো মুহূর্তেরা  অনেক পজিটিভ এনার্জি দেয়। ভালোবাসার কিছু কথা, বাচ্চাকে জড়িয়ে ধরে আদর করা। সহানুভূতি, মমত্ববোধ এগুলি মানুষকে, বাচ্চাকে অনেক বেশি নিরাপদ অনুভব করায়। অন্যের কাছে নিজেকে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে, একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে তুলে ধরে। আর বাচ্চাদের জন্য ইটা প্রবল ভাবে সত্যি। পারিবারিক ছুটিগুলিতে  আমাদের একে অন্যকে জানার প্রচুর সুযোগ থাকে। বাচ্চাদের জন্য এই ইন্টারঅ্যাকশন গুলি খুব গুরুত্ত্বপূর্ন। পরিবারের একে অন্যকে ভালো করে জানা যায়। বাচ্চাদের এই মেলামেশার যথেষ্ট সুযোগ থাকা দরকার। প্রতিদিনের জীবনে আমাদের প্রচুর কাজ থাকে, আর পারিবারিক ছুটি গুলো কোনো চাপিয়ে দেওয়া দায়বদ্ধতা নয়। এটা আপনার জীবনকে কোনোভাবেই বিঘ্নিত করবে না, বরং নানা রঙে ভরিয়ে তুলবে। প্রত্যেকটা সদস্যকে আরো কাছাকাছি আনবে।  ''

সুতরাং, পরবর্তী জন্মদিনে খেলনা কেনা নয়, পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়াটাকে গুরুত্ত্ব দিন। প্ল্যান করে ফেলুন একটা ছোটখাটো আউটিংয়ের। বাচ্চারা সময়  কাটাতে শিখুক  পরিবারের সঙ্গে, বাড়িতে নয়, কোথাও বেড়াতে নিয়ে যান তাদের। এমনকি কাছের মানুষজন অর্থাৎ দাদু দিদা ঠাকুমা এনারা খেলনা উপহার দিয়ে থাকেন, উপহার হিসেবে একটু অন্যরকম কিছু তো ভাবা যেতেই পারে। একটা ছোট্ট ছুটি কাটানো যেতেই পারে বাড়ির বয়স্কদের সঙ্গে। একটা ছোটো ফান্ড করতে পারেন - বেড়াতে যাবার জন্য। বাচ্চারা অনেক সময় উপহার কেনার জন্য টাকা পেয়ে থাকে, বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনেরা দিয়ে থাকেন  কিংবা দাদু ঠাকুমারাও দিয়ে থাকেন, সেই টাকা বেড়াতে যাবার জন্য খরচ করা যেতে পারে। পরিবারের সঙ্গে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলি স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে ছোটদের মনে। খেলনা থেকে আগ্রহ হারিয়ে যাবে, কিন্তু স্মৃতিরা থেকে যাবে সারাজীবন।  


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

একটি প্রেমের গল্প : অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি / The love story of Amrita Pritam and Sahir Ludhianvi

প্রেমের গল্প। প্রেম ভাঙার গল্প। পাত্র-পাত্রী সাহির লুধিয়ানভি এবং অমৃতা প্রীতম। দিকপাল দুই সাহিত্যিক। কেমন ছিল সেই সম্পর্ক ? ''আমি তো জানতাম সাহির, তোমার কোনোদিনই আমার প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষার কোনো দায় ছিল না । কি যেন বলে আজকাল ! ও হ্যাঁ , কমিটমেন্ট ফোবিয়া।  ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে কি না সেই দ্বিধাতেই তো রয়ে গেলে। কেন  যেন মনে হয় আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা  সেই গভীরতর  অতলান্ত  স্পর্শ করে নি কোনোদিন। ছুঁয়ে দেখেনি সেই ভালোবাসার তীব্র টানকে। আচ্ছা সত্যি করে বলো তো, তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবেসেছ  ? যতটা আমি তোমাকে বেসেছি।  "ম্যায়নে টুট  কে প্যায়ার কিয়া তুম সে / ক্যায়া  তুমনে ভী উতনা কিয়া মুঝ সে?'' অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি : Image Courtesy : Indian Express  ' ''মোহাব্বত কি পরখ  কা  ইয়েহি  তো রাস্তা  হ্যায় / তেরি  তালাশ মে নিকলু, তুঝে  না  পায়ু  ম্যায় '' । অমৃতা ভালোবাসা খুঁজেছেন, সেই আকুল করা ভালোবাসা,  হৃদয় তন্ত্রীতে সেই তীব্র...

কলকাতার জলছবি / Photos Of Old Kolkata & The Stories

কিছু তথ্য আর কিছু গল্প- এই নিয়েই বোধহয় এক একটি ছবির ইতিহাস লেখা হয়। আমার এই লেখায় স্থান করে নিয়েছে ভিন্ন স্বাদের পাঁচটি ছবি যাদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় খুব কম, তাই মনের মধ্যে লিখে নিতে হয় এর পিছনের ইতিহাস।  আজ আমরা দেখবো কলকাতাকে। না, পটভূমিকা  ঠিক আধুনিক কলকাতা নয়, বরং আজ আমরা একটু ফিরে দেখবো পুরোনো কলকাতাকে। কিছু ছবি, যা পেয়েছি গুগল এর সৌজন্যে; ছবিগুলো ইন্টারনেটে পাওয়া যায়, শুধু লেখাটা আমার। আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি সেই পুরোনো কলকাতাকে ফিরে দেখতে। এক  একটা ছবিকে কেন্দ্র করে তৈরি করেছি নিজস্ব  কিছু গল্পের বুনোট। কলকাতার ব্যস্ততা- পুরোনো সেই ট্রাম, অপেক্ষমান লোকজন, কোথাও পৌঁছতে চাইছে , ঘরে ফেরার তাড়া-  মিলিয়ে মিশিয়ে কলকাতার একটা ব্যস্ত দিনের ছবি।রাস্তার একপাশে দাঁড়ানো ক্লান্ত গাড়িটাও একটু জিরিয়ে নিচ্ছে। জেগে উঠেছে কলকাতা। তার অবিরাম, নিরলস চলার এক টুকরো ছোঁয়াচ।  হয়তো ব্যস্ত সময় তখন, ব্যস্ত সন্ধ্যা কোনো, আবার হয়তো সারাদিন ই চলে এমন ব্যস্ততা। ব্যস্ত বাজার - খরিদারিতে ব্যস্ত কিছুজন । কিছুজন আবার মন দিয়ে করছে দরাদর...

মেট গালা- কি এই মেট গালা/ What Is Met Gala

  নিউ ইয়র্কের এই ফ্যাশন ইভেন্ট মেট গালা - যা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে... ফ্যাশন দুনিয়াতে ঝড় উঠেছিল ৬ই মে, ২০১৯ এ , কোন সেলিব্রেটি কি পরছেন আর সেটি কিভাবেই বা ক্যারি করছেন, কার পোশাক হয়ে উঠছে যথার্থ ''ফ্যাশান স্টেটমেন্ট'', আর কেই বা পরছেন ''আউট অফ ফ্যাশান'' জামাকাপড়।  আজ কি তাহলে ফ্যাশন শো এর গল্প নিয়ে বসলাম? আজকের গল্পের নাম ''মেট গালা'' ( Met Gala)   ইভেন্ট।  মেট গালা, যেটি আসলে কস্টিউম ইনস্টিটিউট গালা  (Costume Institute Gala) আর যেটা ''মেট বল'' (Met Ball) নামেও পরিচিত।  এবার একটু বিশদে বলি এই  ''মেট গালা'' আসলে কি? এটা আসলে একটা ''ফান্ডরাইসিং ইভেন্ট'' ( Fundraising Event) - এবার প্রশ্ন হলো কি হয় এই ইভেন্টে? উত্তর, নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টস (Metropolitan Museum  of Arts) এর  কস্টিউম ইনস্টিটিউট  (Costume Institute)  জন্য একটা আর্থিক তহবিল তৈরি করা হয়। আর এটা হয়ে থাকে প্রতি বছরই। এখানে যোগ দেবার খরচটিও চমকপ্রদ, তিরিশ হাজার মার্কিন ডলার এই বছরে প্রতিটি সিটের জন্য নেওয়া হয়েছে।...