সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলা অণুগল্প- অনুগল্প সিরিজ /Bengali Story

অসীম আর মাধবীলতা
অসীম.....এই যে এই দিকে, মাধবীলতা আবার ডাক দিলো,....... হ্যাঁ একদম ঠিক যাচ্ছ,......আমার হাতটা লক্ষ্য করে আস্তে আস্তে এগিয়ে এস, না না ওদিকে নয়.......ওদিকে কাঁটার ঝোপ......গায়ে ফুটে গেলে কেলেঙ্কারির একশেষ.....মাধবীলতা আর ভরসা রাখতে পারলো না, নিজেই এগিয়ে গিয়ে অসীমের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে হাঁটতে লাগলো। অসীমের জামাকাপড় ভিজে জবজব করছে। একজায়গায় থামলো তারা, বেশ নির্জন, একটা বাড়ির ভিতরে ঢুকে এল। একটু পুরোনো বাড়ি কিন্তু বসবাসের যোগ্য।
মাথাটা মুছে নাও, বেশ ভিজেছ, ঠান্ডা ব'সে গেলে জ্বর আসতে পারে....মাধবীলতা হাতের মুঠো ছেড়ে দিয়ে একটা গামছা এগিয়ে দিল। .অসীম গামছাটা নিয়ে সামনে খোলা জানালার বাইরের পুকুরটার দিকে তাকিয়ে রইল একদৃষ্টে।
মাধবীলতার শাড়ির আঁচলের একটা অংশ একটু দেখা যাচ্ছে। ওদিকটায় বোধহয় কাঁটাঝোপ ছিল.
কালকের মধ্যে দুটো লাশ ই ভেসে উঠবে আশা করা যায় ।
--------------------------------------------

ছ'য়ে ছটাক : অনুগল্প

১. জানালাটার গ্রিলের মধ্যে দিয়ে নিজের চার হাত পা বের করে দিল সে, এবার শেকল দিয়ে বাঁধার কাজ শুরু হবে।
২.আমার পেনের কালিটা ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছে ইতি, আমাদের এবার যাবার সময় হল,তৈরী হও। ইতি আর রনজিত হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে শুরু করল।
৩. দ্রুত হাতে মাটি কোপাতে লাগল দিব্য, আর বিড়বিড় করতে লাগল। পূরবী পরে আছে একটু দূরে। রক্তে মাখামাখি।
৪. রুদ্র তিথির লেখা চিঠিগুলো গ্যাসের বারনারের মধ্যে গুজে দিচ্ছিল। বেশির ভাগটাই পু্ড়ে গেছে। আর দরকার নেই।
৫. গোলাপগঞ্জ আসার পথে তোমার চোখের পর্দার উপর আমারও ছায়া পড়েছিল, তবে বিস্ফোরণ কেন হয়েছিল সুরনজনা, ভরসা হারানোর বিস্ফোরণ।
৬.অসিতকুমার , তোমার জন্যই অপেক্ষা করে আছি , তুমি এলে ...আমি এবার উঠব, মনিমালা সামনের বটগাছটায় গিয়ে বসল।
-----------------------------------------------------------------------------------------

দ'শে দশ : অণুগল্প

১. তুমি কি আমাকে ভালোবাসার বিনিময়ে কিছু চাও অনুরাধা, আমার কাছাকাছি থাকার বিনিময়ে কিছু কি চাও? কিছু দিতে তো পারবো না, সহস্রাব্দ পিচ্ছিল জ্যোতির্বলয়, তার গভিরে তার জলের আলগা আগল তুলে দেবো।
২. হাওয়া আর বাতাসের কাছাকাছি গিয়ে কান পেতে শোনো, ওরা বলবে আমি ভালো আছি, আলোর মধ্যে নয় সুরমা, জলের গর্ভ আমাদের নিয়তির কথকতা জানান দিয়েছিল।
৩. তোমার লেখা শেষ চিঠিটা পুরিয়ে ফেলেছি, ও'টিতে ভালবাসার কোনো আলো ছিলো না।
৪. সহস্রাব্দ পৃথিবী আর পাটিগণিতিয় গুণিতকে লেখা বহমান রাহুকাল আমার।
৫. হারানো খাতায়, হারানো কলমের নিবে লুকিয়ে থাকা শুকনো ঝর্ণা।
৬. তোমার মনের কুয়াশায় আমার না বলা কথারা পথ হারায়।
৭. চাঁদের কুয়াশা বিনিময়ের মতো আবেশ লাগানো ভালোবাসা তোমার,সুরনজনা।
৮.হাজার বিনিময়ের সুতো ; এ শহর থেকে পালানোর ছুতো।
৯. কথার পিঠে কথারা বসে গেছে; কতকাল পরে বসন্ত এসে গেছে।
১০. আজো ফুল হয়ে ফুুটে আছে তোমার আমার ভালবাসা।








মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস বা মগ্নচৈতন্য / What is Stream of Consciousness?

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস ? সাহিত্য ধারায় এটি এক রীতি, বলতে গেলে লেখনীর এক ধরণ। সাহিত্যের আলোচনায়  কিংবা সমালোচনায় 'স্ট্রিম অফ কনসাসনেস'- ‘Stream of Consciousness’  বা মগ্নচৈতন্য শুধুমাত্র এক শব্দ নয়, এ এক অনন্য, এক স্বতন্ত্র জঁর  ।  মগ্নচৈতন্যের   স্রোত সাহিত্যসৃষ্টির এক অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন ধারা,  যা কিনা  বিংশ শতাব্দীর কিছু বিখ্যাত লেখক   নিযুক্ত এক স্বতন্ত্র লেখন রীতি। নিজেদের লেখনীতে কিছু ঘটনা পরম্পরাকে  বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছিলেন তারা ।  কিন্তু '  মগ্নচৈতন্য '  কী?  কেনই বা  এটি একটি 'ধারা' বা ' জঁর' ?  কিছু  পরিচিতি দিলাম বটে শুরুতে কয়েকটি শব্দকে আশ্রয় করে, তবে  বিস্তারিত আলোচনা  এগোবে আস্তে আস্তে।  এই আপাত সাধারণ এবং একইসঙ্গে ব্যাপকভাবে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা যুক্ত , সাহিত্যিক টার্মটির ধারণা  পরিষ্কার করতে সহায়তা করতে পারে হয়ত এই  আলোচনা ।   Image Courtesy: Steve Jhonson:pixels.com/free image প্রকৃতপক্ষে, ' মগ্নচৈতন্য  '   সাহিত্যের  জঁর  হিসাবে একেবারেই শুরু করেনি    তার  জীবন !  তবে ?   অবাক করা তথ্য এই  যে - সম্ভবতঃ এটি ছিল   এ

আমি হয়তো আবার পাগল হয়ে যাবো- ভার্জিনিয়া উলফের আত্মহত্যা-একটি ট্রাজেডি: The Tragic Tale Of Virginia Wolf's Suicide

  সব আত্মহত্যাই কি আসলে একটা পরিকল্পিত খুন, নাকি স্ব-ইচ্ছায় পালিয়ে যাওয়া? না ফুরোনো স্বপ্ন নিয়ে চলে যেতে হয় না ফেরার দেশে, কিন্তু ভার্জিনিয়া উলফা কেন আত্মহত্যা করে বসলেন? কোন আলো মাখানো জীবনের স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়েছিলেন তিনি !     বসন্তের একটা দিন, হালকা শীত যেন লুকোচুরি খেলছে, যাই-যাই শীত আর গরমে কাবু হবার দিনগুলির মাঝে হালকা বাতাসের শিরশিরানি অনুভব করা যায়।  সকাল বেলার রোদ্দুর ছুঁয়ে যাচ্ছে চতুর্দিক। সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত,  ছেলে বুড়ো সবাই বেরিয়েছে প্রাতঃভ্রমনে,  কেউ বা ব্যস্ত সংসারের খুঁটিনাটি দেখভালে, আবার কারো রয়েছে কাজে যাবার তারা। কিন্তু একজনের কাছে যেন এই পুরো পৃথিবীর আর কিছুই ভালো লাগছে না, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে তার,  লেখা হয়ে গেছে একটা নোট। ওসে নদীর দিকে ধীর পায়ে হাঁটছেন তিনি, কোটের পকেটে ভর্তি করেছেন প্রচুর পাথর, এই পথটা বোধহয় একাই  চলতে হয়, না, কেউ নেই সঙ্গে, কেউ নয়। এই পথ দিয়ে শুধু গন্তব্যে চলেছেন তিনি, যে গন্তব্য থেকে আর ফেরা হবে না, কোনোদিনও নয়, কখনও নয়, কারো কাছেই নয়, মনস্থির করে ফেলেছেন তিনি। কেন করলেন তিনি এটা, কেন নিতে হল এমন সিদ্ধান্ত! ভার্জিনিয়া