সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আগাথা ক্রিস্টি অন্তর্ধান রহস্য/ The Mysterious Disappearance Of Agtha Christie


   হারিয়ে গেছেন আগাথা ক্রিস্টি। হ্যাঁ, সত্যি; সত্যি তিনি হঠাৎ উধাও হয়ে গেছিলেন, কিন্তু কেন?

   শীতের রাত, চারিদিকে শুনশান, অন্ধকারটা যেন আরো ঘন হয়ে আসছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডা। ঘড়িতে রাত সাড়ে ৯টা বেজেছে। দিনটা ৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার, সাল ১৯২৬। স্থান বার্কশায়ার। একজন মানুষ ঘরে তখন একা, উঠে দাঁড়ালেন তিনি তার আর্মচেয়ার ছেড়ে। বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে চলে এলেন মেয়ের ঘরে। সাত বছরের মেয়ে রোজালিন্ড তখন অঘোরে ঘুমোচ্ছে। মেয়ের মুখের  দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে কপালে ছোট্ট করে চুমু খেয়ে নিজের মনে বিড়বিড় করে উচ্চরণ করলেন- শুভরাত্রি,  দ্রুতপায়ে  নিচে নেমে এলেন। তারপর বাড়ির বাইরে বেরিয়ে চড়ে বসলেন নিজের প্রিয় গাড়ি মরিস কাউলিতে; তার গাড়ি যেন  ধীরে ধীরে কুয়াশার অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। এতক্ষন যে ঘটনার বিবরণী দেওয়া হল, সেটি একটা রোমহর্ষক ঘটনার সূত্রপাত মাত্র।আর এই ঘটনা যার সঙ্গে ঘটেছিল তিনি আর কেউ নন  বিখ্যাত রহস্য-রোমাঞ্চ ঔপন্যাসিক আগাথা ক্রিস্টি।  

এর পরবর্তী ১১ দিন যেন একদম হারিয়ে গেলেন তিনি। 


আগাথা ক্রিস্টি অন্তর্ধান রহস্য/ The Mysterious Disappearance of Agtha Christie
আগাথা ক্রিস্টি; Image Courtesy : pintertest. com


    
আগাথা ক্রিস্টি তার বার্কশায়ারের বাড়ি থেকে উধাও- খবরের কাগজের পাতায় একদম হইচই ফেলার মত খবর।  কিন্তু কি রহস্য ছিল ক্রিস্টির হঠাৎ করে এই হারিয়ে যাবার পিছনে? প্রশ্নের পর প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে।  

     
ক্রিস্টির এই হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া আলোড়ন তুলল জনমানসে ।এই অভূতপূর্ব ঘটনা সাড়া জাগাল সব মহলেই । বিখ্যাত লেখিকার এহেন্  আকস্মিক অন্তর্ধানে গোয়েন্দা পুলিশ নড়েচড়ে বসল। সব কাজ ছেড়ে প্রাধান্য দেওয়া হল ক্রিস্টি অন্তর্ধান রহস্যকে । অন্তত পক্ষে হাজারখানেক পুলিশ তার সন্ধানে নামল। কয়েক শ' সাধারণ ভক্ত-অনুরাগীরাও  যোগ দিল তাতে, উদ্দেশ্য প্রিয় লেখিকার হদিস বের করা।এমনকি ইতিহাসে প্রথমবার, কোনো ব্যক্তিকে খোঁজার জন্য উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হলো।হোম সেক্রেটারি উইলিয়াম জয়েনসন হিকস নিজের তত্ত্বাবধানে নিলেন সমস্ত তদন্তভার, পুলিশ বিভাগকে নির্দেশ দিলেন জোরদার তদন্তের। ব্রিটেনের জনপ্রিয়তম ও প্রখ্যাত লেখক- শার্লক হোমসের স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল এবং লর্ড পিটার উইমসি সিরিজের রচয়িতা ডরোথি এল. সেয়ার্সএর সাহায্যও নেওয়া হল। আশা ছিল , এই দুই গুণী লেখকের অপরাধ বিজ্ঞানের উপর অগাধ জ্ঞান আগাথা ক্রিস্টির সন্ধান পেতে সাহায্য করবে । স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের আবার তন্ত্রবিদ্যায় খুবই  আগ্রহ।তিনি রহস্য সমাধানে অতিপ্রাকৃত শক্তির সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবলেন। ক্রিস্টির ব্যবহৃত একজোড়া পুরোনো গ্লাভস নিয়ে তিনি হাজির হলেন স্বনামধন্য এক মিডিয়ামের কাছে। আশা, ওই মিডিয়াম বুঝি জানাতে পারবেন কোথায় আছেন লেখিকা। কিন্তু এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হল। 

https://assets.roar.media/assets/nEd77tBI6qpF1WmB_1d763f56856b9559546696427a516f28fc8a2541.jpg
                     

  আগাথা ক্রিস্টির অন্তর্ধানের সংবাদ; Image Courtesy : allaboutagathachristie.com 
                                        
                                  

        
ওদিকে তদন্তের কাজ চলতে লাগল  পুরোদমে। একদিন কেটে গেল..... দুদিন কেটে গেল, তিনদিন কেটে গেল ...এখনো লেখিকার কোনো খোঁজ পাওয়া গেল না। একেকটি করে দিন যেতে থাকে আর সবার মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খায়, কোথায় গেলেন ক্রিস্টি ?বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা হাওয়া উড়তে থাকে। ওদিকে সংবাদপত্রের লোকেরাও বসে নেই, তারাও নিজেদের মতো করে তদন্তে নেমে পড়ল, অনুমানের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন  খবর দিয়ে  কাগজ ভরাতে লাগল। অবশেষে ক্রিস্টির গাড়িটা খুঁজে বের করল পুলিশ।  তবে সেটা করতে তাদেরকে  খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। গিল্ডফোর্ডের কাছে নিউল্যান্ডস কর্নারের একটি খাঁড়া ঢালে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেল সেটি, কিন্তু লেখিকার কোনো চিহ্নমাত্র পাওয়া গেল না সেখানে । গাড়িটি কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল, এমন কোনো সূত্রও  পাওয়া গেল না। 

সারা বিশ্ব তোলপাড় এনার অন্তর্ধানে ; Image Courtesy : bio.com 
       
      যেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটা পাওয়া যায়, তার অদূরেই রয়েছে সাইলেন্ট পুল নামের একটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা।  কিছুদিন আগেই সেখানে পাওয়া গিয়েছিল দুটি শিশুর লাশ। চাঞ্চল্য বাড়ল এই খবরে। তবে কি?.....তবে কি এখানেই? সম্ভাবনার কথা?.... সাংবাদিকরা দুইয়ে দুইয়ে চার করে ফেললো,বানিয়ে ফেললো একটা নতুন খবর- ওই ঝর্ণার জলে ডুবে  আত্মহত্যা করেছেন আগাথা ক্রিস্টি। কিন্তু না, এই ব্যক্তব্যের সপক্ষে কোনো জোরালো মোটিভ পাওয়া গেল না এবং তন্ন তন্ন করে খুঁজেও ঝর্ণার জলে কংবা আশেপাশে কোথাওই পাওয়া গেল না লেখিকার মৃতদেহ। আত্মহত্যাই বা কোনো করবেন তিনি, লেখিকা হিসেবে খ্যাতির মধ্যগগনে, পেশাদার জীবনের সেরা সময় তখন। ষষ্ঠ উপন্যাস ' দ্য মার্ডার অব রজার আক্রয়েড - " The Murder of Roger Ackroyd "  তখন বেস্টসেলার। ব্রিটেনে আগাথা ক্রিস্টি এক অত্যন্ত সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় নাম। 

     সব মিলিয়ে এই অন্তর্ধান রহস্য যেন হয়ে উঠলো মুখরোচক অথচ রহস্যঘেরা টানটান বিনোদনে ভরপুর, ক্রিস্টির নিজস্ব ঘরানার- হুডানিট ( whodunit)সব উপাদানই যেখানে মজুত। 

     নতুন আরেকটি সম্ভাবনার কোথাও উঠল। বলা হ'ল, গোটা ঘটনাটাই নাকি  নিছকই একটি পাবলিসিটি স্টান্ট। ক্রিস্টির এই হঠাৎ গা ঢাকা দেওয়া, এই সবটাই নাকি ইচ্ছাকৃত; পরবর্তী বইয়ের প্রোমোশনের জন্যই নাকি তার এমন নিরুদ্দেশের অভিনয়! আশা,পরবর্তী বইটি বিক্রীবাটায় ইতিপূর্বের সমস্ত রেকর্ড ভাঙবে।তবে এরই সঙ্গে আরো ভয়াবহ একটি আশঙ্কার  কথাও প্রকাশ পেতে লাগল, গুজব ছড়াল, স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন আগাথা ক্রিস্টি।কেননা, তার স্বামী আর্চি ক্রিস্টির যে চরিত্রের দোষ আছে! এমনকি শোনা যায়, তিনি নাকি একজন রক্ষিতাও রেখেছেন!

            রহস্যের সমাধানে সম্ভবনাময় জায়গাগুলো অর্থাৎ যে যে জায়গাগুলোতে ক্রিস্টি যেতে পারেন বলে অনুমান, তন্ন তন্ন করে খোঁজা হল, যদি একটা কোনোভাবে একটা মূল্যবান সূত্র পাওয়া যায়! কিন্তু সে আশাতেও গুড়েবালি। 

      সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে আগাথা ক্রিস্টির অন্তর্ধানের খবর।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রথম পাতাতেই প্রচন্ড গুরুত্বের সাথে প্রকাশ পেল এই সংক্রান্ত খবর।  

      অবশেষে এল ১৪ই ডিসেম্বর, সেই তারিখ যেদিন নিখোঁজ হওয়ার পুরো ১১ দিন পর খোঁজ মিলল আগাথা ক্রিস্টির। তাকে অবশ্য নিরাপদে এবং সুস্থ শরীরেই পাওয়া গেল হ্যারোগেটের এক হোটেলে। কিন্ত এতে রহস্যের জট ছাড়াল তো না-ই, বরং তা যেন আরো গিঁট পাকিয়ে গেল, কিছু প্রশ্নের না জানা উত্তর সামনে ফেলে রেখে গেল। কারণ লেখিকা নিজেই যে মনে করতে পারছেন না, কি হয়েছিল তার, কোথায় চলে গিয়েছিলেন তিনি, কি করেই বা এলেন এই হোটেলে, আর সব থেকে বড় কথা কি কারণেই বা বাড়ি থেকে বাড়িয়ে এতদূরে চলে এসেছিলেন তিনি! 

      তাই সব সমীকরণের  সূত্রগুলি একত্র করে একটা যুক্তিসঙ্গত ফলাফলে পৌঁছানোর দায়িত্বভার বর্তালো পুলিশের উপর। তারা এই সিদ্ধান্তে এল যে, নিজের বাড়ি ছেড়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন আগাথা ক্রিস্টি।  মাঝরাস্তায় হয়তো, তার গাড়ি কোনো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়, এবং তা খাদে পরে যায়। আগাথা দুর্ঘটনায় কোনো চোট পান নি, তিনি তখন একটা ট্রেন ধরে হ্যারোগেট চলে যান।সেখানে তিনি ওঠেন সোয়ান হাইড্রা নামে এক হোটেলে, যেটি পরবর্তীতে ওল্ড সোয়ান হোটেল নামে পরিচিতি পায়। তখন তার কাছে বলতে গেলে টাকাপয়সা ছাড়া প্রায় কোনো জিনিষপত্রই ছিল না। কিন্তু, অদ্ভুত বিষয় হ'ল, হোটেলে  ওঠার সময়ে তিনি থেরেসা নিল নামটা ব্যবহার করেন, যেটি কি না তার স্বামীর রক্ষিতার নাম। 

    

 এই সেই হোটেলে যেখানে খোঁজ  সন্ধান মিলেছিল আগাথা ক্রিস্টির; Image Courtesy : getty images
                
                  
                       
      ১৯২০'র দশকের সেই সময়টায়, অত্যন্ত অভিজাত হোটেল ছিল  হ্যারোগেট, আর সেখানে রকমারি সুযোগ-সুবিধাও  পাওয়া যেত। আর  অভিজাত ক্রিস্টিকেও সেখানে বেমানান মনে হয় নি কারো। তিনি নিয়মিতই বল ডান্স এবং পাম কোর্টে অংশ নিচ্ছিলেন। কেউই তাকে দেখে চিনতে পারেনি যে তিনিই সেই হারিয়ে যাওয়া বিখ্যাত লেখিকা। কিন্তু, হোটেলের ব্যাঞ্জো বাদকদের মধ্যে একজন, বব ট্যাপিন, চিনে ফেলে তাকে। সাথে সাথে পুলিশকে এ বিষয়ে জানায়  সে। পুলিশ এ তথ্য জানায় আগাথা ক্রিস্টির স্বামী কর্নেল ক্রিস্টিকে। 
       খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান কর্নেল ক্রিস্টি। কিন্তু আগাথারই  যেন কোনো ইচ্ছা নেই  বাড়ি ফিরে যাওয়ার। পোশাক পরিবর্তনের ছুতোয় হোটেলে নিজের ঘরে গিয়ে অনেকটা সময় নিজেকে বন্ধ রাখেন  তিনি। আর সেই সময়টুকু হোটেলের লাউঞ্জেই  অপেক্ষা করতে থাকেন  কর্নেল ক্রিস্টি। স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফায়ার যান আগাথা ক্রিস্টি, কিন্তু ১৯২৬ সালের ৩ থেকে ১৪ই ডিসেম্বর, এই ১১ দিন ঠিক কি হয়েছিল সে ব্যাপারে কখনোই মুখ খোলেননি তিনি।  

          তার স্বামীর মতে, গাড়ি দুর্ঘটনার ফলে আগাথার স্মৃতি থেকে ওই ১১ দিনের কথা পুরোপুরি মুছে গিয়েছিল। কিন্তু আগাথা ক্রিস্টির জীবনীকার এন্ড্রু নরম্যানের বিশ্বাস, তিনি সম্ভবত  কোনো একটি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন, ওই ১১ দিনের ঘটনা সম্পূর্ণ মুছে যাওয়াই তার প্রমান। কিংবা কোনো ট্রমা, কিংবা ডিপ্রেশন হতে পারে, যা বড় ধরনের কোনো মানসিক আঘাত বা বিষন্নতার  কারণে হয়ে থাকতে পারে। নরম্যান আরো মনে করেন, আগাথা ক্রিস্টির নিজের মধ্যে  থেরেসা নিল নামক একটা সম্পূর্ণ নতুন ব্যক্তিত্ত্ব অজান্তে গড়ে তোলা, নিজের ছবি দেখেও চিনতে না পারা প্রভৃতি ছিল মূলতঃ অ্যামনেশিয়া বা স্মৃতিবিলোপের লক্ষণ।  আত্মজৈবনিক উপন্যাস 'আনফিনিশড পোর্ট্রেট'-Unfinished Portrait এ সিলিয়া চরিত্রটির মাধ্যমে তিনি নিজের সেই সময়কার মানসিক অবস্থার বর্ণনা দেন।
     অন্তর্ধান ও ফিরে আসার পরবর্তী সময় ক্রিস্টি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন ও লেখালেখির জগতে ফিরে যান । ১৯২৮ সালে তিনি প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দেন,  ১৯৩০ সালে বিয়ে করেন বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ স্যার ম্যাক্স ম্যালোয়ানকে।

      আগাথা ক্রিস্টির সব গল্প বা উপন্যাসের শেষাংশে এসে রহস্যোদঘাটন হয়, কিন্তু তার নিজের জীবনের এই রহস্যজনক অধ্যায়টি এতটাই গোলমেলে ও জটিল যে, হয়তো এরকুল পোয়ারো বা মিস মারপলের পক্ষেও সম্ভব নয় এর সমাধান খুঁজে বের করা।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস বা মগ্নচৈতন্য / What is Stream of Consciousness?

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস ? সাহিত্য ধারায় এটি এক রীতি, বলতে গেলে লেখনীর এক ধরণ। সাহিত্যের আলোচনায়  কিংবা সমালোচনায় 'স্ট্রিম অফ কনসাসনেস'- ‘Stream of Consciousness’  বা মগ্নচৈতন্য শুধুমাত্র এক শব্দ নয়, এ এক অনন্য, এক স্বতন্ত্র জঁর  ।  মগ্নচৈতন্যের   স্রোত সাহিত্যসৃষ্টির এক অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন ধারা,  যা কিনা  বিংশ শতাব্দীর কিছু বিখ্যাত লেখক   নিযুক্ত এক স্বতন্ত্র লেখন রীতি। নিজেদের লেখনীতে কিছু ঘটনা পরম্পরাকে  বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছিলেন তারা ।  কিন্তু '  মগ্নচৈতন্য '  কী?  কেনই বা  এটি একটি 'ধারা' বা ' জঁর' ?  কিছু  পরিচিতি দিলাম বটে শুরুতে কয়েকটি শব্দকে আশ্রয় করে, তবে  বিস্তারিত আলোচনা  এগোবে আস্তে আস্তে।  এই আপাত সাধারণ এবং একইসঙ্গে ব্যাপকভাবে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা যুক্ত , সাহিত্যিক টার্মটির ধারণা  পরিষ্কার করতে সহায়তা করতে পারে হয়ত এই  আলোচনা ।   Image Courtesy: Steve Jhonson:pixels.com/free image প্রকৃতপক্ষে, ' মগ্নচৈতন্য  '   সাহিত্যের  জঁর  হিসাবে একেবারেই শুরু করেনি    তার  জীবন !  তবে ?   অবাক করা তথ্য এই  যে - সম্ভবতঃ এটি ছিল   এ

বাংলা অণুগল্প- অনুগল্প সিরিজ /Bengali Story

অসীম আর মাধবীলতা অসীম.....এই যে এই দিকে, মাধবীলতা আবার ডাক দিলো,....... হ্যাঁ একদম ঠিক যাচ্ছ,......আমার হাতটা লক্ষ্য করে আস্তে আস্তে এগিয়ে এস, না না ওদিকে নয়.......ওদিকে কাঁটার ঝোপ......গায়ে ফুটে গেলে কেলেঙ্কারির একশেষ.....মাধবীলতা আর ভরসা রাখতে পারলো না, নিজেই এগিয়ে গিয়ে অসীমের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে হাঁটতে লাগলো। অসীমের জামাকাপড় ভিজে জবজব করছে। একজায়গায় থামলো তারা, বেশ নির্জন, একটা বাড়ির ভিতরে ঢুকে এল। একটু পুরোনো বাড়ি কিন্তু বসবাসের যোগ্য। মাথাটা মুছে নাও, বেশ ভিজেছ, ঠান্ডা ব'সে গেলে জ্বর আসতে পারে....মাধবীলতা হাতের মুঠো ছেড়ে দিয়ে একটা গামছা এগিয়ে দিল। .অসীম গামছাটা নিয়ে সামনে খোলা জানালার বাইরের পুকুরটার দিকে তাকিয়ে রইল একদৃষ্টে। মাধবীলতার শাড়ির আঁচলের একটা অংশ একটু দেখা যাচ্ছে। ওদিকটায় বোধহয় কাঁটাঝোপ ছিল. কালকের মধ্যে দুটো লাশ ই ভেসে উঠবে আশা করা যায় । -------------------------------------------- ছ'য়ে ছটাক : অনুগল্প ১. জানালাটার গ্রিলের মধ্যে দিয়ে নিজের চার হাত পা বের করে দিল সে, এবার শেকল দিয়ে বাঁধার কাজ শুরু হবে। ২.আমার পেনের কালিটা ধীরে ধীরে শেষ

বাংলা ছোটগল্প - ছোটগল্প সিরিজ / Bengali Short Story

একটি দিন ''দাদু, ও দাদু, সৈন্য কি গো?''- একটু চমকে উঠলো তামলিং।  হাতের কাজটা থামিয়ে  তুয়াংলিংয়ের দিকে  তাকালো  মুখ তুলে  ।  '' এই কথা কোথা থেকে জানলে দিদিভাই?'' '' ওই তো, বাজারে গেছিলাম আজকে , সেখানেই তো সবাই বলাবলি করছিলো, সৈন্যরা নাকি আজকে মাঙ্গোগিরির নেতা শিশিমারাকে ধরে নিয়ে গেছে।   মাঙ্গোগিরি   কি গো দাদু, আর নেতা মানে কি ? ওই শিশিমারা সে কে গো ?''  এত  প্রশ্নের সামনে প'রে তামলিং এর মুখে  জোগায় না  কথা  ।   বাড়ির সামনে বসে গাছগুলোকে পরিচর্যা করছে বুড়ো তামিলিং। তারপর করবে বাগানের পরিচর্যা। সবজি বাগানে বুড়ো তামলিং সবজি ফলায়।  সারা বছরের পরিবারের খাবারের জন্য সবজি এখন  থেকেই আসে যে । পরিবার বলতে বুড়ো তামলিং, তার বৌ বুড়ি তুয়ানকে এবং দুটো নাতি নাতনি  তুয়াংলিং আর শিনবোনা। আরো দুজন ছিল এই পরিবারে, যাদের কথা ভাবতে গেলে.... '' ও দাদু, কি গো চুপ করে রয়েছো কোনো ?'' বুড়ো তামলিং  তাকালো  উদাস চোখ তুলে , সামনে দাঁড়িয়ে তুয়াংলিং ,চোখে কৌতূহল।  '' যা জানতে চাইছো দিদিভাই, সে কথা বলতে গেলে অনেক গল্প বলতে