সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ছবির জীবন - পৃথিবীর ইতিহাসে সাদা - কালো ছবি / Story Behind the Photos- The Black And White Photos In World History



কিছু ছবি এমনও  আছে যাতে উঠে আসে প্রতিদিনকার গল্প। হাসিকান্না, ওঠাপড়ার মুহূর্তগুলো ছুঁয়ে যায় আমাদের সবাইকে। এই ছবি সিরিজে থাকলো এমনি কিছু গল্পের আভাস। পৃথিবীর সাদা-কালো ছবির ইতিহাসে এই ছবিগুলি জায়গা করে নিয়েছে বটে, কিন্তু গল্পগুলো হারিয়ে গেছে। তাদের খুঁজে নিয়ে জড়ো করেছি একজায়গায়। দশটি ছবি আর সামান্য কিছু তথ্য সংগ্ৰহ  করেছি  গুগল থেকে। আর আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছি ছবির পিছনের ছোট্ট ছোট্ট গল্পগুলোকে।




১. ছবির সময়কাল  ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ, ছোট্ট ছেলেটি হয়তো দুষ্টামি করেছিল,সেই সময় বাবা হয়তো ব্যস্ত ছিলেন  গুরুত্ত্বপূর্ন কাজে, ছেলেটি শোনেনি বাবার বকুনি। বাবা তাই নিয়ে নিয়েছে তার প্রিয় কুকুরছানাটিকে। ছেলেটি বাবার  কাছে অনুরোধ করছে তার কুকুরকে ফিরিয়ে দিতে। আর প্রতিজ্ঞা করছে তার প্রিয় কুকুরছানাটিকে নিয়ে খেলা করলেও সে বাবাকে বিরক্ত করবে না। এমন তো আমরা নিজেদের ছোটবেলায় কত করেছি, সেই ছোট্ট ছোট্ট স্মৃতি উস্কে দিয়ে যায় এই ছবি




ছবির জীবন : Story Behind the Photos


২. এই ছবির কোলাজ ভিক্টরিয়ান যুগের, ছবির সময়কাল ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দ, নিজেদের মধ্যে খুনসুটিতে মগ্ন এই দম্পতি। যদিও গম্ভীর থাকারই চেষ্টা করেছিল দুজনে, কিন্ত শেষ পর্যন্ত বোধহয় সেটা হয়ে ওঠেনি। খুলে পড়েছে  গাম্ভীর্যের মুখোশ, অতীব কষ্ট করে চেপে রাখা হাসিতে ফেটে পড়েছে স্ত্রী, তার দেখা-দেখি স্বামীও। স্ত্রীর মনে পরে গেছে একসঙ্গে কাটানো পুরোনো কোনো রোম্যান্টিক মুহূর্ত, সেদিন বসে ছিল তারা পাশাপাশি, মনে করে নিজের মনেই পেয়েছে লজ্জা, আর মুখ গুঁজেছে স্বামীটির বুকে। স্বামীর মুখেও লজ্জার আভাস।





৩. এই ছবিটির নাম - প্রিয় বন্ধু। এর থেকে ভালো বর্ণনা বোধহয় হতে পারে না।  ছবিটির বর্ণনা ছবিটি নিজেই। এ ছবি চেনায় বন্ধুত্বের থেকে বড় সম্পর্ক আর কিছু হতে পারে না শুধু মানুষের সঙ্গে মানুষের নয়, এই প্রাণীটিও যে ছাড়িয়ে যেতে পারে প্রচলিত  সম্পর্কের চেনা পরিধি, ছবিটি তার উদাহরণ। 






৪. মেরিন সার্জেন্ট ফ্র্যাঙ্ক প্রেটর এর ছবি এটি। কোনো এক যুদ্ধের সময়কাল, ফ্র্যাঙ্ক একটা ছোট্ট বিড়ালছানাকে খাবার খাওয়াচ্ছেন- এই ছানাটার মা মারা গেছে।  কি প্রচন্ড একাগ্রতা, যুদ্ধের এই ধ্বংস লীলার মধ্যে এক  অসহায় প্রাণীকে বাঁচানোর কি আকুল ও অদম্য প্রচেষ্টা। হয়তো  যুদ্ধের ধ্বংস- লীলার মাঝে ক্লান্ত এক টুকরো প্রাণের আশ্বাস।






৫. এই ছবিটি ভারী মজার। একজন হোটেল কর্মী কথা বলছে বা বলা ভালো ভাষা বোঝার চেষ্টা করছে একটা ছোট্ট ডাচস্যান্ড কুকুরের। ছবিটি তোলা হয়েছে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে, পিকাডিলি সার্কাস, লন্ডনে। কুকুরটি কি হোটেল সম্পর্কে খবরাখবর নিচ্ছে নাকি কোথাও যাবার কথা ছিল, রাস্তা হারিয়ে ফেলেছে,তাই ঠিকানা জানতে চাইছে ! আর কর্মীটিও তার কাজের ব্যস্ততার মাঝে ছোট্ট কুকুরটির সঙ্গে আলাপচারিতায় ব্যস্ত। 





 ৬. এই প্রেমের কাহিনী হয়তো আজন্মের, যা বয়ে চলে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পরেও। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে তোলা এই ছবি সাক্ষী, অনেক স্মৃতিকথার। এই স্মৃতিবাহক টি আছে হল্যান্ডে, একজন  ক্যাথলিক স্ত্রী ও তার প্রটেস্ট্যান্ট স্বামীর  শেষ ও অনন্তকালের ভালোবাসার স্মৃতি হিসেবে। যখন জীবিত ছিলেন দুজনে, এক  নিবিড় ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন একে অপরের পাশে থাকার, সারাজীবনের জন্য। জীবনের পরেও যে জীবন আছে সেখানেও হয়তো সুখে- দুঃখে, হাসি - কান্নায়, আদরে - খুনসুটিতে সংসার করছেন তারা। তাই একে অপরের হাত নিয়ে নিজেদের ছুঁয়ে থাকা-  ধর্মের বাধা সত্ত্বেও।   








৭. এই ছবিটি তোলা হয়েছে ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে, ভেনিস বীচ, ক্যালিফোর্নিয়াতে। একটা পশুপাখিদের প্রদর্শনীতে হাজির হয়েছে এই ছোট্ট মেয়েটি। তার কাছে আছে একটা পোষা ব্যাঙ। প্রিয় পোষ্যকে নিয়ে সে এসেছে এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে। 




৮. একটি শিশু হাসপাতাল, চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাচ্চাদের উপর প্রাণীদের প্রভাব - ছবিটির মূল বিষয়বস্তু। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে তোলা এই ছবিটি; একটি ছোট্ট বাচ্চা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কষ্ট হচ্ছে বাচ্চাটির এত চিকিৎসা যন্ত্রের বেড়াজালে। তাই সামনে রাখা হয়েছে একটা গামলা আর তাতে খেলা করছে কতগুলি ছোট্ট ছোট্ট হাঁসের ছানা আর বাচ্চাটির মুখে ফুটেছে হাসি। 





 ৯. ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দ, আমেরিকার বিখ্যাত অভিনেত্রী, লেখিকা এবং হাস্যকৌতুক শিল্পী ক্যারি ফিসার মনোযোগ দিয়ে দেখছেন তার মা ডেবি রেনল্ডস এর অনুষ্ঠান। ডেবি রেনল্ডস ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারি।  একাধারে ছিলেন অভিনেত্রী,গায়িকা অপরদিকে ছিলেন ব্যবসায়ী ও  চলচ্চিত্র সংগ্রাহক।  শিশু ক্যারির মধ্যে ফুটে উঠেছিল তার মায়ের সমস্ত গুণাবলী। 




১০. এই ছবিটি লন্ডনের চিড়িয়াখানার। একটা ছোট্ট মেয়ে

 পেঙ্গুইনের ডানা ধরে হেঁটে যাচ্ছে। আর পাশে পাশে হাঁটছে           পেঙ্গুইনের ছানাগুলো। ছবির সময়কাল ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ। একটা        মিষ্টি বন্ধুত্বের ছবি । লন্ডনের এক চমৎকার  সকালবেলায়              যেন ছোট্ট মেয়েটি তার বন্ধুদের নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছে আর            দুজনেই উপভোগ করছে এই হঠাৎ পাওয়া বন্ধুত্বকে।  



(  All Images  Courtesy: pinterest.com 












মন্তব্যসমূহ