সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লিও টলস্টয় এবং তাঁর সমাজ চেতনা/ Leo Tolstoy And His Writings On Society


লিও টলস্টয় এবং তাঁর সমাজ চেতনা/ Leo Tolstoy And His Writings On Society


সরকারের অবলুপ্তি এবং ভায়োলেন্সের অ্যান্টিডট হিসাবে রাষ্ট্রের অসারতা , এমন ভেবেছেন লিও তলস্তয়। 



লিও টলস্টয় এবং তাঁর সমাজ চেতনা/ Leo Tolstoy And His Writings On Society
লিও তলস্তয়: Image Courtesy: Getty Images 



“violence no longer rests on the belief in its utility, but only on the fact of its having existed so long, and being organized by the ruling classes who profit by it."


হিংসা র এক উপযোগিতা আছে, আর তা নির্ভর করে কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের বিশ্বাসের উপর । আমার আপনার মতের উপর নির্ভর করে না, তবে এটি কেন এতদিন বিদ্যমান সমাজে? এর থাকার একমাত্র কারণ এর  দ্বারা লাভবান হবার সম্ভাবনা একমাত্র শাসক শ্রেণীর। শাসক শ্রেণী দ্বারা সংগঠিত হিংসা।


“to be led by a coward is to be controlled by all that the coward fears,” - কাপুরুষের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ, কাপুরুষের দ্বারা পরিচালিত, আর কাপুরুষের দ্বারা ভীতি প্রদর্শন-  অক্টাভিয়া বাটলার (o ctavia b)  লিখেছেন নেতাদের বেছে নেওয়ার বিষয়ে, তার তীব্র উপদেশ।  “to be led by a fool is to be led by the opportunists who control the fool.” - একজন বোকার নেতৃত্বে থাকা, সুবিধাবাদীদের দ্বারা পরিচালিত হওয়া, এবং  বোকাটিকে নিয়ন্ত্রণ করা - সবগুলোই অসুবিধাজনক। প্রাণীদের যেমন গভীর ভাবে কিছু অনুভব করবার ক্ষমতা আছে, তেমনি ভাবে আমরাও কিছু  কিছু গভীর অর্থ অনুভব করতে পারি, সর্বোপরি নেতৃত্বে থাকা  নিজের নৈতিকতা আর বিবেককে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে আমরা নিজেরাই পারি।    প্যারাডক্স (paradox) হলো আমারা, এই মানবেরা সংখ্যায় অনেক। আক্রমণাত্মক প্রজাতির আমরা, আমরা এই মানুষেরা, প্রচুর বৈপরীত্য আছে আমাদের মধ্যে, যেহেতু আমাদের মধ্যে প্রচুর প্রচুর বিভিন্ন মতবাদের মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি, তাই শাসিত হওয়া যেন আমাদের স্ব-নির্মিত ভাগ্য - আর এটা আমরা মেনেও নিয়েছি। কিন্তু আমরা এখনও  দুর্নীতি মুক্ত, স্বয়ংসম্পূর্ণ  একটা সরকার উদ্ভাবন করতে পারি নি।


লিও টলস্টয় ( leo tolstoy ) সেপ্টেম্বর ৯, ১৮২৮ - নভেম্বর ২০, ১৯১০) শেষ লেখা - "last steps: the late writings of leo tolstoy"- লাস্ট স্টেপস: দ্য লেট রাইটিংস অফ লিও টলস্টয়-   জীবনের শেষ ধাপ জুড়ে এই প্যারাডক্সের সাথে টানাপোড়েন চলতে থাকে। তার শেষ জার্নালগুলির যে সংগ্রহ আছে, যা আমাদের বিজ্ঞান, আধ্যাত্মিকতার প্রতি তার চিন্তনের প্রতিফলন  এবং জীবনের , বেঁচে থাকার অর্থ, জীবন নিয়ে আসলে কি ভাবব তার  অনুসন্ধান দেন।


বিংশ শতাব্দীর প্রথম বছর, জীবন শেষ হয়ে আসছে,  শেষ দিনগুলিতে লিখতে গিয়ে, প্রবীণ টলস্টয় আধুনিক জীবনের অন্যতম প্রধান ভণ্ডামির কথা বলেছে


"the whole complexity of our urban life lies in the fact that people think up and accustom themselves to harmful requirements, and then use all their mental energies to satisfy them or reduce the harm caused by satisfying them… before speaking about the goodness of satisfying one’s requirements, one ought to decide what requirements constitute goodness. that’s very important.


আমাদের শহুরে জীবনের পুরো জটিলতা এক চরম সত্যের মধ্যেই নিহিত। লোকজন ক্ষতিকারক চাহিদাগুলির সাথে যেন মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে।  নিজেকে চিন্তা করতে কোনো এক আধুনিক বিলাস বহুল জীবনর মাঝে এবং অভ্যস্ত করে ফেলে ধীরে ধীরে এবং তারপরে নিজেদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে, অপরাধ বোধ ভোগে। আর তারপর নিজেদের  ক্ষতি হ্রাস করার জন্য তাদের সমস্ত মানসিক শক্তি একত্রিত করে ব্যবহার করে। জীবনে বিলাস এবং তার পর চরম অপরাধবোধ, এই চক্রাকারে যেন জীবন ঘুরতে থাকে। নিজেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, জীবনের পথে চলতে গেলে  প্রয়োজনীয়তাগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এটাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  


(চলবে)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস বা মগ্নচৈতন্য / What is Stream of Consciousness?

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস ? সাহিত্য ধারায় এটি এক রীতি, বলতে গেলে লেখনীর এক ধরণ। সাহিত্যের আলোচনায়  কিংবা সমালোচনায় 'স্ট্রিম অফ কনসাসনেস'- ‘Stream of Consciousness’  বা মগ্নচৈতন্য শুধুমাত্র এক শব্দ নয়, এ এক অনন্য, এক স্বতন্ত্র জঁর  ।  মগ্নচৈতন্যের   স্রোত সাহিত্যসৃষ্টির এক অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন ধারা,  যা কিনা  বিংশ শতাব্দীর কিছু বিখ্যাত লেখক   নিযুক্ত এক স্বতন্ত্র লেখন রীতি। নিজেদের লেখনীতে কিছু ঘটনা পরম্পরাকে  বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছিলেন তারা ।  কিন্তু '  মগ্নচৈতন্য '  কী?  কেনই বা  এটি একটি 'ধারা' বা ' জঁর' ?  কিছু  পরিচিতি দিলাম বটে শুরুতে কয়েকটি শব্দকে আশ্রয় করে, তবে  বিস্তারিত আলোচনা  এগোবে আস্তে আস্তে।  এই আপাত সাধারণ এবং একইসঙ্গে ব্যাপকভাবে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা যুক্ত , সাহিত্যিক টার্মটির ধারণা  পরিষ্কার করতে সহায়তা করতে পারে হয়ত এই  আলোচনা ।   Image Courtesy: Steve Jhonson:pixels.com/free image প্রকৃতপক্ষে...

একটি প্রেমের গল্প : অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি / The love story of Amrita Pritam and Sahir Ludhianvi

প্রেমের গল্প। প্রেম ভাঙার গল্প। পাত্র-পাত্রী সাহির লুধিয়ানভি এবং অমৃতা প্রীতম। দিকপাল দুই সাহিত্যিক। কেমন ছিল সেই সম্পর্ক ? ''আমি তো জানতাম সাহির, তোমার কোনোদিনই আমার প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষার কোনো দায় ছিল না । কি যেন বলে আজকাল ! ও হ্যাঁ , কমিটমেন্ট ফোবিয়া।  ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে কি না সেই দ্বিধাতেই তো রয়ে গেলে। কেন  যেন মনে হয় আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা  সেই গভীরতর  অতলান্ত  স্পর্শ করে নি কোনোদিন। ছুঁয়ে দেখেনি সেই ভালোবাসার তীব্র টানকে। আচ্ছা সত্যি করে বলো তো, তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবেসেছ  ? যতটা আমি তোমাকে বেসেছি।  "ম্যায়নে টুট  কে প্যায়ার কিয়া তুম সে / ক্যায়া  তুমনে ভী উতনা কিয়া মুঝ সে?'' অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি : Image Courtesy : Indian Express  ' ''মোহাব্বত কি পরখ  কা  ইয়েহি  তো রাস্তা  হ্যায় / তেরি  তালাশ মে নিকলু, তুঝে  না  পায়ু  ম্যায় '' । অমৃতা ভালোবাসা খুঁজেছেন, সেই আকুল করা ভালোবাসা,  হৃদয় তন্ত্রীতে সেই তীব্র...

ভারতে পিকনিকের খাবারের বৈচিত্র্যময় ইতিহাস / The Diverse History Of Picnic Food In India

  ভারতে পিকনিকের খাবারের বৈচিত্র্যময় ইতিহাস / The Diverse History Of Picnic Food In India ভারতে  কিরকম ভাবে হয় পিকনিক। কিভাবেই বা হতো ব্রিটিশ আমলের পিকনিক? মহাভারতের যুগেও কি হতো পিকনিক?  পিকনিক: Image Courtesy: Getty Image  মহাভারত থেকে ব্রিটিশ রাজ - বাড়ির বাইরে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া , না, না কোনো রেস্তোরাঁর কথা বলছি না, বলছি পিকনিকের (picnic) কথা,  বাংলায় চড়ুইভাতি বলি যাকে। ছোটবেলার পিকনিকের স্মৃতি রাজত্ব করছে এখনও,আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহু যুগের ঐতিহ্য এই চড়ুইভাতি এখনও টিকে আছে বহু বদলের পরেও।  শুধুমাত্র মেনু পরিবর্তিত হয়েছে,পরিবর্তিত হয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর চরিত্র, ভৌগলিক দূরত্বের সাথে আলাদা হয়েছে বিভিন্ন  চড়ুইভাতির রকম - সকম, খাবারের মেনুর। আশি কিংবা নব্বই দশকের প্রকাশিত হওয়া কোনো গল্পের সিরিজে, সিরিয়ালে, উপন্যাসে, কিংবা রম রম করে  হল গুলোতে চলা সিনেমাতে  পক্ষে মেয়েদের রঙিন মাসিক পত্রিকাতে  পিকনিকের উল্লেখ , ছবি থাকতই থাকত। বড় বেলায় দেখে ছোটবেলার পিকনিকের ছবি। কিন্তু  একটা জিনিস নিয়ে দুঃখ আমার বরাবরই থেকে...