ব্লু - ওশান স্ট্র্যাটেজি কি / What is Blue Ocean Strategy
আজকে আলোচনা করবো অন্য্ একটা বিষয় নিয়ে , আমি এতদিন যে যে বিষয় নিয়ে লিখেছি তার থেকে এই বিষয়টি আলাদা। আমার আজকের বিষয় মার্কেটিং এবং এই ক্ষেত্রে ব্যবহৃত একটি স্ট্রাটেজি যার নাম ব্লু ওশান স্ট্রাটেজি। এই স্ট্রাটেজি মূলত প্রয়োগ করা হয় মার্কেটিংয়ে; অর্থাৎ কোনো জিনিস বিক্রি করতে গেলে সব কোম্পানিকেই একটা নির্দিষ্ট স্ট্রাটেজি অথবা কৌশল অবলম্বন করতে হয়, ব্লু ওশান স্ট্রাটেজি তেমনই একটা কৌশল।
একটু উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করি। মনে করা যাক, সাঁতার কেটে সমুদ্র পার হবার একটি প্রতিযোগিতা চলছে যেখানে সমস্ত প্রতিযোগীদের লক্ষ্য হলো সমুদ্রের অপর পারে পৌঁছনো। প্রতিযোগীর সংখ্যা প্রচুর। আর প্রত্যেকেই একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রত্যেকেরই যোগ্যতা সমান। কোনো একজন বিশেষ প্রতিযোগী যে এই প্রতিযোগিতায় জিতবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সুতরাং সমতুল্য এই প্রতিযোগীদের মধ্যে কোনো একজনকে এই প্রতিযোগিতায় জিততে গেলে কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করতে হবে। প্রথমত, এখানে কোনো একজন প্রতিযোগীর শুধুমাত্র নিজের সাঁতারে মনোযোগ দিলেই চলবে না। আরেকটা জিনিসও তাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, কোনো ভাবেই অপর প্রতিযোগীরা যেন তাকে ছাপিয়ে যেতে না পারে। আর সেটা নিশ্চিত করতে সেই নির্দিষ্ট প্রতিযোগীকে অন্যান্য প্রতিযোগী যাতে পিছিয়ে পরে তার চেষ্টা করে যেতে হবে। অন্যথা অন্যান্য প্রত্যেক প্রতিযোগী সেই নির্দিষ্ট প্রতিযোগীকে পিছিয়ে দেবার চেষ্টা করবে। অর্থাৎ এখানে প্রতিযোগিতা সাংঘাতিক পর্যায়ের। কিন্তু জয়ী হবে একজনই।
এবারে ধরা যাক, আরো একটি সমুদ্র। এই সমুদ্রটি খুব গভীর এবং বিশাল। এই সমদ্র পার হতে হবে। সময় লাগবে আগের সমুদ্রের থেকে দ্বিগুন কিংবা তিনগুন। কিন্তু এই সমুদ্রে সাঁতার কাটছে কেবল একজন। তার নেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। অন্য্ কোনো প্রতিযোগী অন্য্ একজনকে পিছনে ফেলে দিয়ে এগিয়ে গেলো - এই ভয়তে তটস্থ থাকতে হচ্ছে না তাকে । কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতার প্রশ্নই নেই এখানে । নিজের মতো করে সমুদ্রে সাঁতার কাটার অফুরন্ত সুযোগ আছে । আর আছে অঢেল সময়, তাই ভুল পথে সাঁতার কাটলেও ঠিক রাস্তায় ফিরে আসার সম্ভাবনাও আছে। এই কার্যক্রমটি তাই শেষ হবে খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে।
একটু উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করি। মনে করা যাক, সাঁতার কেটে সমুদ্র পার হবার একটি প্রতিযোগিতা চলছে যেখানে সমস্ত প্রতিযোগীদের লক্ষ্য হলো সমুদ্রের অপর পারে পৌঁছনো। প্রতিযোগীর সংখ্যা প্রচুর। আর প্রত্যেকেই একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রত্যেকেরই যোগ্যতা সমান। কোনো একজন বিশেষ প্রতিযোগী যে এই প্রতিযোগিতায় জিতবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সুতরাং সমতুল্য এই প্রতিযোগীদের মধ্যে কোনো একজনকে এই প্রতিযোগিতায় জিততে গেলে কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করতে হবে। প্রথমত, এখানে কোনো একজন প্রতিযোগীর শুধুমাত্র নিজের সাঁতারে মনোযোগ দিলেই চলবে না। আরেকটা জিনিসও তাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, কোনো ভাবেই অপর প্রতিযোগীরা যেন তাকে ছাপিয়ে যেতে না পারে। আর সেটা নিশ্চিত করতে সেই নির্দিষ্ট প্রতিযোগীকে অন্যান্য প্রতিযোগী যাতে পিছিয়ে পরে তার চেষ্টা করে যেতে হবে। অন্যথা অন্যান্য প্রত্যেক প্রতিযোগী সেই নির্দিষ্ট প্রতিযোগীকে পিছিয়ে দেবার চেষ্টা করবে। অর্থাৎ এখানে প্রতিযোগিতা সাংঘাতিক পর্যায়ের। কিন্তু জয়ী হবে একজনই।
এবারে ধরা যাক, আরো একটি সমুদ্র। এই সমুদ্রটি খুব গভীর এবং বিশাল। এই সমদ্র পার হতে হবে। সময় লাগবে আগের সমুদ্রের থেকে দ্বিগুন কিংবা তিনগুন। কিন্তু এই সমুদ্রে সাঁতার কাটছে কেবল একজন। তার নেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। অন্য্ কোনো প্রতিযোগী অন্য্ একজনকে পিছনে ফেলে দিয়ে এগিয়ে গেলো - এই ভয়তে তটস্থ থাকতে হচ্ছে না তাকে । কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতার প্রশ্নই নেই এখানে । নিজের মতো করে সমুদ্রে সাঁতার কাটার অফুরন্ত সুযোগ আছে । আর আছে অঢেল সময়, তাই ভুল পথে সাঁতার কাটলেও ঠিক রাস্তায় ফিরে আসার সম্ভাবনাও আছে। এই কার্যক্রমটি তাই শেষ হবে খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে।
ব্লু ওশান স্ট্রাটেজি ; Image Courtesy : Amazon |
২০০৪ সালে অধ্যাপক ডব্লিউ চ্যান কিম ও রেনে মাবর্ন ব্যবসার কৌশল বা স্ট্র্যাটেজিতে প্রয়োগ করেন এক ফর্মুলার। নিয়ে আসেন এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। "Blue Ocean Strategy: How to Create Uncontested Market Space and Make Competition Irrelevant" বইটির মাধ্যমে পরিচয় করান দুটি বাণিজ্যিক ধারণার সাথে অর্থাৎ মার্কেটিং স্ট্রাটেজির সঙ্গে। এই দুটি হলো - 'রেড ওশান' এবং 'ব্লু ওশান' । সহজ কথায় বলতে গেলে , রেড ওশান মানে যেখানে প্রতিযোগিতা সাংঘাতিক এবং প্রতিযোগীরাও একে অপরকে যেকোনো মূল্যে পিছনে ফেলে দিয়ে এগিয়ে যেতে চাইছে। আর ব্লু ওশান মানে যেখানে প্রতিযোগিতা কম, বা একেবারেই নেই; শান্তিপূর্ণ ভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির পক্ষে ব্যবসা করা সম্ভব ।
ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজির মূল কথা কী?
ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি বলতে মূলত বোঝানো হয় এমন একটি বাজারকে যেখানে পণ্য মজুত আছে, কিন্তু কোনো প্রতিযোগিতাই নেই, কিংবা থাকলেও তা নিতান্তই কম। এই স্ট্র্যাটেজির মূলমন্ত্র হলো , এমন কোনো বিশেষ পণ্য বা পরিষেবা খুঁজে বের করে তা উপভোক্তার কাছে তুলে ধরা। এই পণ্যটি যেহেতু একেবারে নতুন অথবা বিশেষ গুন্ সম্পন্ন এবং এক অথবা একের অধিক হলেও খুবই স্বল্পসংখ্যক অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত রয়েছে, ফলে মূল্য নির্ধারণের বিশেষ কোনো চাপ থাকে না ।
ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি বলতে মূলত বোঝানো হয় এমন একটি বাজারকে যেখানে পণ্য মজুত আছে, কিন্তু কোনো প্রতিযোগিতাই নেই, কিংবা থাকলেও তা নিতান্তই কম। এই স্ট্র্যাটেজির মূলমন্ত্র হলো , এমন কোনো বিশেষ পণ্য বা পরিষেবা খুঁজে বের করে তা উপভোক্তার কাছে তুলে ধরা। এই পণ্যটি যেহেতু একেবারে নতুন অথবা বিশেষ গুন্ সম্পন্ন এবং এক অথবা একের অধিক হলেও খুবই স্বল্পসংখ্যক অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত রয়েছে, ফলে মূল্য নির্ধারণের বিশেষ কোনো চাপ থাকে না ।
কি ভাবে কাজ করে এই স্ট্রাটেজি ?
এই স্ট্র্যাটেজি কেবল নির্দিষ্ট কিছু ব্যবসাতেই সীমাবদ্ধ এমন মোটেই নয়। এর প্রয়োগ ঘটানো যেতে পারে প্রায় সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। ব্লু ওশান কীভাবে কাজ করে এবং কোথায় এটি রেড ওশান স্ট্র্যাটেজি থেকে আলাদা সেটা একটু দেখে নি
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজির পার্থক্য; Image Courtesy: Chan Kim & Renée Mauborgne
বর্তমান বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রচুর, এবং তা যেকোনো ব্যবসাতেই রয়েছে। যেকোনো পণ্য বাজারজাত করবার জন্য, এবং তা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেবার জন্য একে অন্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ফলে প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে তৈরী হচ্ছে তুমুল লড়াইএর ক্ষেত্র । সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানই চায় নিজেদের পণ্য দিয়ে বাজার দখল করতে। আর বাজার দখলের জন্য দরকার কিছু কৌশল। সেগুলির মধ্যে একটি হলো, পণ্যের মূল্য যথাসম্ভব হ্রাস করা অর্থাৎ বেশির ভাগ ক্রেতার কথা মাথায় রেখে যতোটা সম্ভব পণ্যের বিনিময় মূল্য বা দাম কম রাখা। স্বভাবতই যে প্রতিষ্ঠানের পণ্যের দাম কম, অধিকাংশ মানুষ সেই প্রতিষ্ঠানের পণ্যই কিনতে পছন্দ করবে । ফলত বাজারে সেই পণ্যটিরই চাহিদা বাড়বে। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা দেখা যায় সেটি হলো বাজারে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পণ্যের দাম কম করা সম্ভবপর হয় না। কারণ অনেক সময় দেখা যায় কোনো একটা প্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম কম করে বাজার দখল করতে পারে ঠিকই কিন্তু প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আবার যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান পণ্যের মূল্য হ্রাস করতে পারে, দিনের শেষে তাদের লাভের পরিমান করতে গিয়ে দেখা যায় সেটা আশাতীত রকমের কম। এরকম পরিস্থিতি উদ্ভবের কারণ হলো বাজারের অত্যাধিক সংকোচন।সংকুচিত বাজারের কারণে পণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান আর উপভোক্তার অনুপাত থাকে খুব কম। আর এরকম সংকুচিত বাজারকেই বলা হয় রেড ওশান।
যখন এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় আর কোনো নতুন সম্ভাবনা অর্থাৎ পণ্যের বাজারজাত করার কোনো নতুন কৌশল আর থাকে না। ফলত নতুন সম্ভাবনার পথগুলি খুঁজে বের করতে হয়। অর্থাৎ এমন কোনো ব্যবসার ধারণা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে হবে যেটি নিয়ে খুব বেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে না, এবং সেক্ষেত্রে যথেষ্ট সম্ভাবনা তৈরির পরিস্থিতিও থাকে ।
এই স্ট্র্যাটেজি কেবল নির্দিষ্ট কিছু ব্যবসাতেই সীমাবদ্ধ এমন মোটেই নয়। এর প্রয়োগ ঘটানো যেতে পারে প্রায় সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। ব্লু ওশান কীভাবে কাজ করে এবং কোথায় এটি রেড ওশান স্ট্র্যাটেজি থেকে আলাদা সেটা একটু দেখে নি
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজির পার্থক্য; Image Courtesy: Chan Kim & Renée Mauborgne |
বর্তমান বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রচুর, এবং তা যেকোনো ব্যবসাতেই রয়েছে। যেকোনো পণ্য বাজারজাত করবার জন্য, এবং তা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেবার জন্য একে অন্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ফলে প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে তৈরী হচ্ছে তুমুল লড়াইএর ক্ষেত্র । সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানই চায় নিজেদের পণ্য দিয়ে বাজার দখল করতে। আর বাজার দখলের জন্য দরকার কিছু কৌশল। সেগুলির মধ্যে একটি হলো, পণ্যের মূল্য যথাসম্ভব হ্রাস করা অর্থাৎ বেশির ভাগ ক্রেতার কথা মাথায় রেখে যতোটা সম্ভব পণ্যের বিনিময় মূল্য বা দাম কম রাখা। স্বভাবতই যে প্রতিষ্ঠানের পণ্যের দাম কম, অধিকাংশ মানুষ সেই প্রতিষ্ঠানের পণ্যই কিনতে পছন্দ করবে । ফলত বাজারে সেই পণ্যটিরই চাহিদা বাড়বে। কিন্তু এখানে একটা সমস্যা দেখা যায় সেটি হলো বাজারে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পণ্যের দাম কম করা সম্ভবপর হয় না। কারণ অনেক সময় দেখা যায় কোনো একটা প্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম কম করে বাজার দখল করতে পারে ঠিকই কিন্তু প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আবার যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান পণ্যের মূল্য হ্রাস করতে পারে, দিনের শেষে তাদের লাভের পরিমান করতে গিয়ে দেখা যায় সেটা আশাতীত রকমের কম। এরকম পরিস্থিতি উদ্ভবের কারণ হলো বাজারের অত্যাধিক সংকোচন।সংকুচিত বাজারের কারণে পণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান আর উপভোক্তার অনুপাত থাকে খুব কম। আর এরকম সংকুচিত বাজারকেই বলা হয় রেড ওশান।
যখন এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় আর কোনো নতুন সম্ভাবনা অর্থাৎ পণ্যের বাজারজাত করার কোনো নতুন কৌশল আর থাকে না। ফলত নতুন সম্ভাবনার পথগুলি খুঁজে বের করতে হয়। অর্থাৎ এমন কোনো ব্যবসার ধারণা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে হবে যেটি নিয়ে খুব বেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে না, এবং সেক্ষেত্রে যথেষ্ট সম্ভাবনা তৈরির পরিস্থিতিও থাকে ।
কি কি সম্ভাবনা আছে এই স্ট্রাটেজির ?
ব্লু ওশান স্ট্রাটেজি , যেখানে নতুন পণ্য বা পরিষেবা যেটাই বাজারে নিয়ে আসা হোক না কেন তা বাজারজাত হয় মাত্রই ক্রেতা বা ভোক্তাদের মধ্যে নতুন চাহিদা সৃষ্টি করবে, তাই এখানে বিক্রি ও লাভের পরিমাণ সর্বাধিক হবে, এবং প্রতিযোগিতা ব্যাপারটি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। সুতরাং আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে ,
১, ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজিতে এমন কোনো পণ্য অথবা পরিষেবার চাহিদা তৈরী করা হয় অথবা বাজারজাত করা হয় যেখানে উপভোক্তা অথবা ক্রেতার সংখ্যা উত্তরত্তোর বেড়ে যাবে, ফলত বিক্রির পরিমান হবে সর্বোচ্চ। তাই লাভের পরিমাণও হবে সর্বোচ্চ।
২. এক্ষেত্রে খুব বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা নেই, কারণ খুব কম সংখ্যক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িত থাকবে।
রেড ওশান আর ব্লুয় ওশান স্ট্রাটেজির বিস্তার ; Image Courtesy: Blue Ocean Strategy
ব্লু ওশান স্ট্রাটেজি , যেখানে নতুন পণ্য বা পরিষেবা যেটাই বাজারে নিয়ে আসা হোক না কেন তা বাজারজাত হয় মাত্রই ক্রেতা বা ভোক্তাদের মধ্যে নতুন চাহিদা সৃষ্টি করবে, তাই এখানে বিক্রি ও লাভের পরিমাণ সর্বাধিক হবে, এবং প্রতিযোগিতা ব্যাপারটি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। সুতরাং আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে ,
১, ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজিতে এমন কোনো পণ্য অথবা পরিষেবার চাহিদা তৈরী করা হয় অথবা বাজারজাত করা হয় যেখানে উপভোক্তা অথবা ক্রেতার সংখ্যা উত্তরত্তোর বেড়ে যাবে, ফলত বিক্রির পরিমান হবে সর্বোচ্চ। তাই লাভের পরিমাণও হবে সর্বোচ্চ।
২. এক্ষেত্রে খুব বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা নেই, কারণ খুব কম সংখ্যক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িত থাকবে।
১, ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজিতে এমন কোনো পণ্য অথবা পরিষেবার চাহিদা তৈরী করা হয় অথবা বাজারজাত করা হয় যেখানে উপভোক্তা অথবা ক্রেতার সংখ্যা উত্তরত্তোর বেড়ে যাবে, ফলত বিক্রির পরিমান হবে সর্বোচ্চ। তাই লাভের পরিমাণও হবে সর্বোচ্চ।
২. এক্ষেত্রে খুব বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা নেই, কারণ খুব কম সংখ্যক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িত থাকবে।
রেড ওশান আর ব্লুয় ওশান স্ট্রাটেজির বিস্তার ; Image Courtesy: Blue Ocean Strategy |
কি কি চ্যালেঞ্জ আছে ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজির ?
এই স্ট্রাটেজির চ্যালেঞ্জ একটু আলোচনা করা যাক, নতুন কোনো পণ্য বা পরিষেবা বাজারে আনলেই যে সেটি ব্লু ওশান স্ট্রাটেজির অন্তর্গত হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ বর্তমান বাজারে পাওয়া যায় না এমন কোনো কিছু বাজারে আনা হলেও যে তা গ্রহণযোগ্য হবে সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই, ক্রেতা বা উপভোক্তারা যাতে সেটি গ্রহণ করেন তার ব্যবস্থা আগে সুনিশ্চিত করতে হবে । সেজন্য দরকার আগে সম্ভাব্য ক্রেতাকে অথবা উপভোক্তাকে সম্ভাব্য বাজারজাত পণ্য অথবা পরিষেবাটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা। উপযুক্ত তথ্য না থাকলে কেউই পণ্য অথবা পরিষেবা গ্রহণ করতে চাইবে না।
একটা উদাহরণ সহযোগে বোঝানো যাক : ধরা যাক উপভোক্তারা কোনো একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির একটি বিশেষ ধরণের বিস্কুট খেতে অভ্যস্ত। তারা দীর্ঘকাল ধরেই এই বিস্কুট খেয়ে আসছে। এখন অন্য একটি কোম্পানি আর এক স্বাদের বিস্কুট বাজারে যদি আনতে চায় তাহলে প্রথম প্রশ্ন হবে সেটা কেউ কিন্যে কেন ? আগের বিস্কুটের থেকে স্বাদে কি এমন পার্থক্য যে এই বিস্কুটটি তারা কিনবে ? তাই আগে , সম্ভাব্য বাজারজাত বিস্কুটটি গুনাগুন প্রচার করতে হবে। অর্থাৎ নতুন কোনো পণ্য বা পরিষেবা বাজারজাত করবার আগে সেটি তার বর্তমান বিকল্পের থেকে গুনে এবং মানে শ্রেয়তর কি না সেটি সুনিশ্চিত করতে হবে। তার সঙ্গে চালাতে হবে উপযুক্ত প্রচার। ফলত ক্রেতা অথবা উপভোক্তা সেই পণ্য অথবা পরিষেবার গুনাগুন বিচার করে সেটির সুবিধা গ্রহণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারবে।
এই স্ট্রাটেজির চ্যালেঞ্জ একটু আলোচনা করা যাক, নতুন কোনো পণ্য বা পরিষেবা বাজারে আনলেই যে সেটি ব্লু ওশান স্ট্রাটেজির অন্তর্গত হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ বর্তমান বাজারে পাওয়া যায় না এমন কোনো কিছু বাজারে আনা হলেও যে তা গ্রহণযোগ্য হবে সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই, ক্রেতা বা উপভোক্তারা যাতে সেটি গ্রহণ করেন তার ব্যবস্থা আগে সুনিশ্চিত করতে হবে । সেজন্য দরকার আগে সম্ভাব্য ক্রেতাকে অথবা উপভোক্তাকে সম্ভাব্য বাজারজাত পণ্য অথবা পরিষেবাটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা। উপযুক্ত তথ্য না থাকলে কেউই পণ্য অথবা পরিষেবা গ্রহণ করতে চাইবে না।
একটা উদাহরণ সহযোগে বোঝানো যাক : ধরা যাক উপভোক্তারা কোনো একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির একটি বিশেষ ধরণের বিস্কুট খেতে অভ্যস্ত। তারা দীর্ঘকাল ধরেই এই বিস্কুট খেয়ে আসছে। এখন অন্য একটি কোম্পানি আর এক স্বাদের বিস্কুট বাজারে যদি আনতে চায় তাহলে প্রথম প্রশ্ন হবে সেটা কেউ কিন্যে কেন ? আগের বিস্কুটের থেকে স্বাদে কি এমন পার্থক্য যে এই বিস্কুটটি তারা কিনবে ? তাই আগে , সম্ভাব্য বাজারজাত বিস্কুটটি গুনাগুন প্রচার করতে হবে। অর্থাৎ নতুন কোনো পণ্য বা পরিষেবা বাজারজাত করবার আগে সেটি তার বর্তমান বিকল্পের থেকে গুনে এবং মানে শ্রেয়তর কি না সেটি সুনিশ্চিত করতে হবে। তার সঙ্গে চালাতে হবে উপযুক্ত প্রচার। ফলত ক্রেতা অথবা উপভোক্তা সেই পণ্য অথবা পরিষেবার গুনাগুন বিচার করে সেটির সুবিধা গ্রহণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারবে।
একটা উদাহরণ সহযোগে বোঝানো যাক : ধরা যাক উপভোক্তারা কোনো একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির একটি বিশেষ ধরণের বিস্কুট খেতে অভ্যস্ত। তারা দীর্ঘকাল ধরেই এই বিস্কুট খেয়ে আসছে। এখন অন্য একটি কোম্পানি আর এক স্বাদের বিস্কুট বাজারে যদি আনতে চায় তাহলে প্রথম প্রশ্ন হবে সেটা কেউ কিন্যে কেন ? আগের বিস্কুটের থেকে স্বাদে কি এমন পার্থক্য যে এই বিস্কুটটি তারা কিনবে ? তাই আগে , সম্ভাব্য বাজারজাত বিস্কুটটি গুনাগুন প্রচার করতে হবে। অর্থাৎ নতুন কোনো পণ্য বা পরিষেবা বাজারজাত করবার আগে সেটি তার বর্তমান বিকল্পের থেকে গুনে এবং মানে শ্রেয়তর কি না সেটি সুনিশ্চিত করতে হবে। তার সঙ্গে চালাতে হবে উপযুক্ত প্রচার। ফলত ক্রেতা অথবা উপভোক্তা সেই পণ্য অথবা পরিষেবার গুনাগুন বিচার করে সেটির সুবিধা গ্রহণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারবে।
ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজির উদাহরণ
এবার উদাহরণ দিয়ে বোঝাবো ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি আসলে কাজ করে কিভাবে। উদাহরণ হিসেবে নিচ্ছি অ্যাপলের আইটিউনস।
ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজির একটি উদাহরণ অ্যাপলের আইটিউনস ; Image Courtesy: Apple
অ্যাপল ২০০১ সালে বাজারে নিয়ে আসে তাদের ডিজিটাল মিউজিক - আইটিউনস। আগে একজন ব্যক্তি যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট গান শুনতে চাইতেন তাহলে সেটা তার পক্ষে সম্ভব হতো না। কারণ এরকম কোনো ব্যবস্থাপনা তখনও পর্যন্ত চালু হয় নি। তিনি হয়তো একটি মিউজিক এলবামের সবগুলি নয় কোনো একটি বা দুটি গান শুনতে চাইছেন। কিন্তু তাকে কিনতে হবে পুরো গানের সিডিটা। অনেকে আবার ইন্টারনেট থেকে অবৈধভাবে নির্দিষ্ট গান ডাউনলোড করে নিতো। বাড়ছিল পাইরেসি। অনেকসময় এই ডাউনলোড করা গানের গুনগত মানও খারাপ থাকতো। সংগীত বাণিজ্য ক্রমে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো। এই সমস্যার সমাধান নিয়ে বাজারে অবতীর্ন হয় আইটিউনস। এর সুবিধাটি ছিল যে এর মাধ্যমে অ্যাপলের ডিভাইস ব্যবহারকারীরা চাইলেই যেকোনো পছন্দের অ্যালবামের যেকোনো গান ন্যূনতম অর্থের বিনিময়ে কিনে নিতে পারত । অর্থাৎ অল্প খরচে গ্রাহকরা পছন্দের গান পেয়ে
যাচ্ছিল । অর্থের বিনিময়ে ডাউনলোড আইনতও বৈধ, এবং এর থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ থেকে উপকৃত হয় মিউজিক কোম্পানি ও সংগীতশিল্পী দুতরফই ।
আর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় আইটিউনস, এটা বলাই বাহুল্য । ঐ সময় তারা ছিল বাজারে এক ও অদ্বিতীয়, এই প্রযুক্তির উপযোগিতা তারা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছিল। তাই কেবল প্রথম কয়েক বছরেই তারা তাদের সীমিত বিনিয়োগে পরিবর্তে বিপুল পরিমাণ অর্থ লাভ করতে পেরেছিল। অনেক ক্রেতা যারা শুধুমাত্র আইটিউনস এর জন্যই সেসময় অ্যাপলের ডিভাইস কিনেছে। এরকমও দেখা গেছে আইটিউনসের কল্যাণে অ্যাপলের অন্যান্য পরিষেবার বিক্রিও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। প্রথম কয়েক বছর ডিজিটাল মিউজিক সাম্রাজ্যে আইটিউনসই ছিল র্যা। তারা ব্লু ওশান হিসেবে ব্যবহার করতে পেরেছে এই পরিষেবাকে । বর্তমান সময়ে বাজারে অনুরূপ অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীরই আগমন ঘটেছে, কিন্তু এর সূচনা হয়েছিল আইটিউনসের হাত ধরেই। তাই মিউজিক কোম্পানি-সংগীতশিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ গ্রাহক, সকলের পছন্দের তালিকায় আইটিউনসই এখনও শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে।
এবার উদাহরণ দিয়ে বোঝাবো ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি আসলে কাজ করে কিভাবে। উদাহরণ হিসেবে নিচ্ছি অ্যাপলের আইটিউনস।
ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজির একটি উদাহরণ অ্যাপলের আইটিউনস ; Image Courtesy: Apple |
অ্যাপল ২০০১ সালে বাজারে নিয়ে আসে তাদের ডিজিটাল মিউজিক - আইটিউনস। আগে একজন ব্যক্তি যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট গান শুনতে চাইতেন তাহলে সেটা তার পক্ষে সম্ভব হতো না। কারণ এরকম কোনো ব্যবস্থাপনা তখনও পর্যন্ত চালু হয় নি। তিনি হয়তো একটি মিউজিক এলবামের সবগুলি নয় কোনো একটি বা দুটি গান শুনতে চাইছেন। কিন্তু তাকে কিনতে হবে পুরো গানের সিডিটা। অনেকে আবার ইন্টারনেট থেকে অবৈধভাবে নির্দিষ্ট গান ডাউনলোড করে নিতো। বাড়ছিল পাইরেসি। অনেকসময় এই ডাউনলোড করা গানের গুনগত মানও খারাপ থাকতো। সংগীত বাণিজ্য ক্রমে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো। এই সমস্যার সমাধান নিয়ে বাজারে অবতীর্ন হয় আইটিউনস। এর সুবিধাটি ছিল যে এর মাধ্যমে অ্যাপলের ডিভাইস ব্যবহারকারীরা চাইলেই যেকোনো পছন্দের অ্যালবামের যেকোনো গান ন্যূনতম অর্থের বিনিময়ে কিনে নিতে পারত । অর্থাৎ অল্প খরচে গ্রাহকরা পছন্দের গান পেয়ে
যাচ্ছিল । অর্থের বিনিময়ে ডাউনলোড আইনতও বৈধ, এবং এর থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ থেকে উপকৃত হয় মিউজিক কোম্পানি ও সংগীতশিল্পী দুতরফই ।
যাচ্ছিল । অর্থের বিনিময়ে ডাউনলোড আইনতও বৈধ, এবং এর থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ থেকে উপকৃত হয় মিউজিক কোম্পানি ও সংগীতশিল্পী দুতরফই ।
আর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় আইটিউনস, এটা বলাই বাহুল্য । ঐ সময় তারা ছিল বাজারে এক ও অদ্বিতীয়, এই প্রযুক্তির উপযোগিতা তারা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছিল। তাই কেবল প্রথম কয়েক বছরেই তারা তাদের সীমিত বিনিয়োগে পরিবর্তে বিপুল পরিমাণ অর্থ লাভ করতে পেরেছিল। অনেক ক্রেতা যারা শুধুমাত্র আইটিউনস এর জন্যই সেসময় অ্যাপলের ডিভাইস কিনেছে। এরকমও দেখা গেছে আইটিউনসের কল্যাণে অ্যাপলের অন্যান্য পরিষেবার বিক্রিও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। প্রথম কয়েক বছর ডিজিটাল মিউজিক সাম্রাজ্যে আইটিউনসই ছিল র্যা। তারা ব্লু ওশান হিসেবে ব্যবহার করতে পেরেছে এই পরিষেবাকে । বর্তমান সময়ে বাজারে অনুরূপ অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীরই আগমন ঘটেছে, কিন্তু এর সূচনা হয়েছিল আইটিউনসের হাত ধরেই। তাই মিউজিক কোম্পানি-সংগীতশিল্পী থেকে শুরু করে সাধারণ গ্রাহক, সকলের পছন্দের তালিকায় আইটিউনসই এখনও শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন