সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এবং হলোকাস্ট সাহিত্য/ Anne Frank and Holocaust Literature

অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এবং হলোকাস্ট সাহিত্য/ Anne Frank and Holocaust Literature


 অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর ডায়েরি ৭৫ বছর পরেও সাহিত্যে, বিশেষ করে হলোকাস্ট( Holocaust) সাহিত্যে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করেছে। কেন আজও প্রাসঙ্গিক এই ডায়েরি? 




অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এবং হলোকাস্ট সাহিত্য/ Anne Frank and Holocaust Literature

 

অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর ডায়েরি এবং হলোকাস্ট সাহিত্য/ Anne Frank’s Diary and holocaust literature 



অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর ডায়েরি যথাক্রমে থিয়েটার, চলচিত্র এবং টিভি সিরিজের জন্য অনেকবার অ্যাডাপ্টেড  হয়েছে। অ্যানিমেশন, কমিক্সের চরিত্রে এবং ছোটোদের বইতেও এই ডায়েরির ঘটনার বিবরণ, চরিত্রদের  দেখতে পাই আমরা- বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধ এবং সর্বোপরি বেঁচে থাকার আশা- যাকে বলতে পারি "অ্যাবাউট হোপ"- “about hope” এর মূল উপজীব্য হয়ে উঠেছে বারে বারে। অ্যান ফ্র্যাঙ্ককে জানতে চেয়েছি আমরা, কেমন ছিল তার লুকিয়ে থাকার দিনগুলো, ডায়েরির পাতায় পাতায় খুজেঁ নিতে চেয়েছি তাকে। অনেক কল্পকাহিনীর ভিত্তি করা হয়েছে এই ডায়েরিকে, যা সবচেয়ে বেশী ডানা মেলেছে ফিলিপ রথের লেখায়।  সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্ল্যাক হিউমারের ( black humour) উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে এই ডায়েরির কন্টেন্ট। 
বেস্ট সেলার (best-selling) কানাডিয়ান লেখক রোজমেরি সুলিভান (Rosemary Sullivan) সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর ( Anne Frank’s) বিশ্বাসঘাতকতার মামলাটি নাকি সমাধান করা হয়েছে !  আর্নল্ড ভ্যান ডেন বার্গ (Arnold Van Den Bergh) - একজন সুপরিচিত নোটারি (Notary) এবং আমস্টারডাম ইহুদি পরিষদের (Amsterdam Jewish Council ) সদস্য, যিনি  নিজেকে বাঁচানোর জন্য আর নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে জার্মান নাৎসী দখলদার বাহিনীর কাছে লুকিয়ে থাকা ইহুদিদের তালিকা তুলে দিয়েছিলেন! আর যার মধ্যে ছিল অ্যানের পরিবারের সদস্যদের নামও! 



বিশ্বাসঘাতকতা কিংবা কেস অফ বিট্রেয়াল ( case of  betrayal ) :


শুধুমাত্র সুলিভান এই ইস্যুটির তদন্তকারীদের একজন ছিলেন তাই নয়, তিনি একটি বইও লিখেছিলেন যা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল প্রচুর, তুলে ধরা হয়েছিল  অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর কেসটিকে।নজরকাড়া ছিল শিরোনাম তার, অ্যান ফ্র্যাঙ্কের বিশ্বাসঘাতকতা (The Betrayal of Anne Frank).  সংবাদমাধ্যমের যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল বইটি। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভূত পরিচিতি লাভ করে, ফলোয়ার বাড়তে থাকে। কয়েক সপ্তাহ পরে, যুদ্ধের ডকুমেন্টেশনের বা ওয়ার ডকুমেন্টেশন এর (War Documentation) জন্য বিশ্ব-বিখ্যাত নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট ফর ওয়ার ডকুমেন্টেশন এর  (Netherlands Institute For War Documentation) পণ্ডিতদের বা স্কলারদের (Scholer) একটি দল চিরুনি তল্লাশী চালায়। তদন্তের ভার হাতে নেওয়ার পর, প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করা হয়, প্রচুর তথ্য ঘাঁটা হয়, তোলপাড় করে ফেলা হয় যুদ্ধ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যাবলী। 



আর এই বিভিন্ন ঝারাই বাছাইয়ের পর, নেদারল্যান্ডস ইনস্টিটিউট এই বিশ্বাসঘাতকতা তথ্যের উৎস ও তার ব্যবহার এবং এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বোঝার চেষ্টা করেছে, কিছু সমালোচনাও উড়ে এসেছে সুলিভানের দিকে। আর এর উপসংহারে  ভ্যান ডেন বার্গের  বিরুদ্ধে অভিযোগটি  “been conjured out of thin air” হিসেবে রুজু করা হয়েছে।  রিপোর্ট প্রকাশের কয়েক দিনের মধ্যে, বইটির ডাচ সংস্করণের প্রকাশকরা বিক্রি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন। 



অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর ডায়েরি, বেশ স্পষ্টভাবে বলতে গেলে,  এখনও বিক্রি হয় বহুল পরিমাণে।  আমস্টারডামের অ্যান ফ্র্যাঙ্ক হাউস (Anne Frank House) যেখানে অ্যান এবং তার পরিবার লুকিয়ে ছিল দীর্ঘদিন, নেদারল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি পরিদর্শক বহুল স্থান, প্রতি বছরই প্রচুর পর্যটক আসেন এইখানে।  সাইটসিয়িং (sightseeing) বা পরিদর্শন করবার জন্য যে বিখ্যাত সব স্থান আছে নেদারল্যান্ডে, এই ফ্র্যাঙ্ক হাউস হলো তার অন্যতম। দর্শকেরা লাইন দিয়ে  গোপন অ্যানেক্সি বা সিক্রেট এনেক্স (Secret Annexe) দেখতে চান। ব্লকের চারপাশে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান এরা।  অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর ডায়েরি হলোকাস্টের সবচেয়ে বিখ্যাত নথি, ৭০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই বই।  এখন, ১৯৪৭ সালে ডায়েরির প্রকাশের ৭৫ তম বার্ষিকীতে, যেকোনো বইয়ের দোকানে কিংবা অনলাইনে অ্যানা ফ্রাঙ্কের  ডায়েরিটি কেন মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছে ? আসলে এই বই অনুভব করায় আমাদের এর ভিতরে ধরে রাখা এক কঠিন সত্যকে, যুদ্ধের সত্যকে। 



আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কল্পনা করা বেশ কঠিন যে ডায়েরির প্রথম মুদ্রণটি ছিল মাত্র ৩,০৩৬ কপি, অটো ফ্র্যাঙ্ক (Otto Frank) অ্যানের বাবা, হন্যে হয়ে একজন প্রকাশক খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন।  যুদ্ধের মাত্র কয়েক বছর পরে, আউশউইৎস সারভাইভার (Auschwitz Survivor )  এবং মনোবিজ্ঞানী এডি ডি উইন্ড (Eddy De Wind)  লিখেছিলেন যে ডাচ (dutch) জনসাধারণ নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প  (Nazi Concentration Camps) সম্পর্কে তথ্য দিয়ে যেন “soon became sated” হয়ে উঠতে চাইছিল- কোনরকমে যেন নিশ্চিন্ত হতে চাইছিল। কোনো অস্বস্তি থেকে তাড়াতাড়ি দায় ঝেড়ে ফেলার নিশ্চিন্ত খুঁজতে চাইছিল যেন। বেঁচে থাকা, যুদ্ধের ক্ষতের মধ্যে বেঁচে থাকা এক সংগ্রামের কথা শোনাতে চাইছিল।



আবার একটা অন্যরকম সত্যিও ছিল,  ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানি, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, অ্যানের ডায়েরি প্রথমে ছোট ছোট মুদ্রণে প্রকাশিত হয়। আমেরিকায়, ১৯৫২ সালে ডাবলডে (Doubleday) থেকে প্রকাশিত হওয়ার আগে দশজন প্রকাশক এই ডায়েরিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ইউকেতে,  এক ছোট প্রকাশক, ধর্মে ইহুদি, ভ্যালেন্টাইন মিচেল (vallentine mitchell) সাক্ষী ছিলেন এই বইয়ের সীমিত বিক্রীর । প্রাথমিক সাফল্য অর্থাৎ সীমিত বিক্রীর প্রাথমিক সাফল্য পেরিয়ে আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি শুধূ আর একটা ইহুদি সংলাপ হয়ে থাকেনি। যুদ্ধের সংলাপ হয়ে উঠেছে। 



প্রাথমিকভাবে ডায়েরির সীমিত  সাফল্য সম্ভবত এই কারণে যে "হলোকাস্ট" - “holocaust” শব্দটি ১৯৪০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৫০-এর দশকের প্রথম দিকে ইহুদিদের গণহত্যার (genocide) সমার্থক হয়ে ওঠেনি, যার অর্থ সারা পৃথিবীর  পাঠকদের কাছে এই বীভৎসতা অনুধাবন করবার কোনও প্রসঙ্গ এর পূর্বে ছিল না। কিন্তু খুব  শিগগিরই তা পরিবর্তিত হতে দেখা যাবে। শুধুমাত্র অ্যান ফ্র্যাঙ্ক  এবং তাঁর লেখা তাদের ইহুদি প্রসঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না, বরং ব্যবহারিক জীবনের তাঁদের ব্যক্তিগত ধর্মকে আরও কাছে টেনেছিল। 



ডায়েরিটি ১৯৫৫ সালে একটি ব্রডওয়ে নাটকের জন্য অ্যাডাপটেড (adapted) হয়েছিল এবং তারপর বইটি প্রচণ্ড পরিমাণে বিক্রি হতে শুরু হয়, আর তা হয় বিশ্বজুড়ে । অ্যান ফ্র্যাঙ্ককে পরিনত করল সারল্যের এক সর্বজনীন প্রতীকে যাকে বলা যেতে পারে ইউনিভার্সাল সিম্বল ওফ ইনোসেন্স (universal symbol of innocence) সমস্ত ভালোর মন্দকে ধ্বংস করা এই সারল্যের সার্থকতা। এই  প্রক্রিয়ায় অ্যানার ডায়েরিটি একটি সাধারণ হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাতের গল্প নয়, এক বিরাট ধ্বংসযজ্ঞের গল্পের সূত্রপাত। যা যা ধীরে ধীরে বাস্তবতাকে উদঘাটিত করে। 
এর শেষ হয় গোপন অ্যানেক্সিতে লুকিয়ে থাকা আটজনকে নির্বাসিত করার আগে এবং অটো ছাড়া সবাইকে হত্যার মধ্যে দিয়ে। থিয়েটার, সিনেমা, টেলিভিশন, কমিকস এবং শিশুদের বইয়ের জন্য অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর ডাইরির অসংখ্য প্রযোজনা ইঙ্গিত করে, বৃহত্তর জনসাধারণ, বিশেষ করে অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা - বলা ভালো টিন এজার ছেলেমেয়েরা , অ্যানের কিশোর সময়ের ভালোবাসা,ক্ষোভ, জীবনের সাথে নিজেদেরকে চিহ্নিত করতে চায়, এবং একইসঙ্গে উপেক্ষা করার ঝোঁক দেখায়, নির্দেশ করে নিজেদের চাহিদাকে, প্রবণতা দেখায় নতুনকে আঁকড়ে ধরার। হলোকাস্টের প্রাসঙ্গিকতায় বা কনটেক্সট (context) এ অ্যান ফ্র্যাঙ্ক এর নির্বাসন যন্ত্রণা, কিভাবে  এই এত বছর পর কমবয়েসী ছেলেমেয়েদের আবেগকে দিক নির্দেশ করে, কোন দিকেই বা নিয়ে যায়, অনুভব করতে পারে কি সেই সময়কার কালো অধ্যায় কে -  তাও নতুনভাবে খুঁজতে থাকি আমরা। 


  
এই “universalising”- "সর্বজনীন" প্রবৃত্তি নিঃসন্দেহে এখনও রয়ে গেছে।  কিন্তু পশ্চিম বিশ্বের “holocaust consciousness”- "হলোকাস্ট চেতনা" এর উত্থানের অর্থ হল পাঠকরা আজ জানতে পারছে শুধুমাত্র এক নিষ্পাপ কিশোরী অ্যানের ইহুদি ধর্মের কারণে বন্দী হওয়া, যার  চূড়ান্ত পরিণতি অসহায় মৃত্যু৷ তবুও অ্যান এখনও এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব রয়ে গেছে কারণ সে স্বীকৃতভাবে "আমাদের মতো"- “like us”, একটা অ্যাপিলিং ফিগার (appealing figure) ।  এমনকি কয়েক বছর আগে আরও কিছু লেখা আবিষ্কৃত ও  অন্তর্ভুক্তির পরও- অটো ফ্র্যাঙ্ক প্রথমে যা তাকে সরিয়ে দিয়েছিলেন, যা অ্যানের বয়সন্ধিকালের কথা বলে, কোনো সরাসরি যুদ্ধের ধারাবাহিক বিবৃতি ছাড়াই এর প্রতিটি শব্দের মধ্যে যে অদৃশ্য ভয়াবহ উপাদান রয়েছে তা আসলে হলোকাস্টের একটি সংস্করণ হিসাবে পৃথিবীর ইতিহাসে রয়ে যাবে।



সিক্রেট এনেক্স (Secret annex) এর আলাদা করে কোনো বৈশিষ্ট্য বোধহয় নেই। গোপনীয়তা ছিল, পুরো পরিবার নিয়ে অটো ফ্র্যাঙ্ক এর অপেক্ষা ছিল কোনো একদিন মুক্তির। আর যাই হোক না কেন, সেখানে কোনো আউশউইৎস (auschwitz) ছিল না,  কোনো বেলসেন(belsen) ছিল না, কোনো হিংসা ছিল না,কোনো অনাহার ছিল না।  ডায়েরির কিছুটা, বিশেষত  শেষ অংশটা পরিবর্তন করা হয়েছে ব্রডওয়ে (broadway) এবং হলিউড (hollywood) সংস্করণে, যাতে শ্রোতারা অ্যানের বার্তা দিয়ে যায় যে “in spite of everything, i still believe that people are really good at heart”।



  
পৃথিবীর সমস্ত অনিষ্টের  সামনে দাঁড়িয়ে আশার বাণী যা, সবসময় ডায়েরির প্রতিটি পাতায় অনুরণিত হতে থাকে।  কিন্তু আমরা প্রস্তুত কিনা, তা কি আমরা জানি? এমনকি এখনও ?  যখন একজন অ্যান ফ্র্যাঙ্ক তাঁর গল্প বলে, বলে হলোকাস্টের গল্প! কিন্ত  হলকাস্ট (Holocaust) কি একটা গল্প?  যার গল্প বলে তা হলো হলোকাস্ট আসলে কী ছিল – ইউরোপের ইহুদি জনগোষ্ঠীর নির্মম ধ্বংস - যার আসলে কোন সুখী সমাপ্তি নেই – নির্মমতার এক অন্য নির্লজ্জ প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। যে প্রশ্ন আসলে উত্তর খুঁজে চলেছে আধুনিক কালে সারা পৃথিবী জুড়ে শক্তিশালী দেশগুলির আগ্রাসনের।








মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস বা মগ্নচৈতন্য / What is Stream of Consciousness?

কাকে বলে স্ট্রিম অফ কনসাসনেস ? সাহিত্য ধারায় এটি এক রীতি, বলতে গেলে লেখনীর এক ধরণ। সাহিত্যের আলোচনায়  কিংবা সমালোচনায় 'স্ট্রিম অফ কনসাসনেস'- ‘Stream of Consciousness’  বা মগ্নচৈতন্য শুধুমাত্র এক শব্দ নয়, এ এক অনন্য, এক স্বতন্ত্র জঁর  ।  মগ্নচৈতন্যের   স্রোত সাহিত্যসৃষ্টির এক অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন ধারা,  যা কিনা  বিংশ শতাব্দীর কিছু বিখ্যাত লেখক   নিযুক্ত এক স্বতন্ত্র লেখন রীতি। নিজেদের লেখনীতে কিছু ঘটনা পরম্পরাকে  বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছিলেন তারা ।  কিন্তু '  মগ্নচৈতন্য '  কী?  কেনই বা  এটি একটি 'ধারা' বা ' জঁর' ?  কিছু  পরিচিতি দিলাম বটে শুরুতে কয়েকটি শব্দকে আশ্রয় করে, তবে  বিস্তারিত আলোচনা  এগোবে আস্তে আস্তে।  এই আপাত সাধারণ এবং একইসঙ্গে ব্যাপকভাবে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা যুক্ত , সাহিত্যিক টার্মটির ধারণা  পরিষ্কার করতে সহায়তা করতে পারে হয়ত এই  আলোচনা ।   Image Courtesy: Steve Jhonson:pixels.com/free image প্রকৃতপক্ষে, ' মগ্নচৈতন্য  '   সাহিত্যের  জঁর  হিসাবে একেবারেই শুরু করেনি    তার  জীবন !  তবে ?   অবাক করা তথ্য এই  যে - সম্ভবতঃ এটি ছিল   এ

আমি হয়তো আবার পাগল হয়ে যাবো- ভার্জিনিয়া উলফের আত্মহত্যা-একটি ট্রাজেডি: The Tragic Tale Of Virginia Wolf's Suicide

  সব আত্মহত্যাই কি আসলে একটা পরিকল্পিত খুন, নাকি স্ব-ইচ্ছায় পালিয়ে যাওয়া? না ফুরোনো স্বপ্ন নিয়ে চলে যেতে হয় না ফেরার দেশে, কিন্তু ভার্জিনিয়া উলফা কেন আত্মহত্যা করে বসলেন? কোন আলো মাখানো জীবনের স্বপ্ন পূরণ করতে চেয়েছিলেন তিনি !     বসন্তের একটা দিন, হালকা শীত যেন লুকোচুরি খেলছে, যাই-যাই শীত আর গরমে কাবু হবার দিনগুলির মাঝে হালকা বাতাসের শিরশিরানি অনুভব করা যায়।  সকাল বেলার রোদ্দুর ছুঁয়ে যাচ্ছে চতুর্দিক। সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত,  ছেলে বুড়ো সবাই বেরিয়েছে প্রাতঃভ্রমনে,  কেউ বা ব্যস্ত সংসারের খুঁটিনাটি দেখভালে, আবার কারো রয়েছে কাজে যাবার তারা। কিন্তু একজনের কাছে যেন এই পুরো পৃথিবীর আর কিছুই ভালো লাগছে না, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে তার,  লেখা হয়ে গেছে একটা নোট। ওসে নদীর দিকে ধীর পায়ে হাঁটছেন তিনি, কোটের পকেটে ভর্তি করেছেন প্রচুর পাথর, এই পথটা বোধহয় একাই  চলতে হয়, না, কেউ নেই সঙ্গে, কেউ নয়। এই পথ দিয়ে শুধু গন্তব্যে চলেছেন তিনি, যে গন্তব্য থেকে আর ফেরা হবে না, কোনোদিনও নয়, কখনও নয়, কারো কাছেই নয়, মনস্থির করে ফেলেছেন তিনি। কেন করলেন তিনি এটা, কেন নিতে হল এমন সিদ্ধান্ত! ভার্জিনিয়া

বাংলা অণুগল্প- অনুগল্প সিরিজ /Bengali Story

অসীম আর মাধবীলতা অসীম.....এই যে এই দিকে, মাধবীলতা আবার ডাক দিলো,....... হ্যাঁ একদম ঠিক যাচ্ছ,......আমার হাতটা লক্ষ্য করে আস্তে আস্তে এগিয়ে এস, না না ওদিকে নয়.......ওদিকে কাঁটার ঝোপ......গায়ে ফুটে গেলে কেলেঙ্কারির একশেষ.....মাধবীলতা আর ভরসা রাখতে পারলো না, নিজেই এগিয়ে গিয়ে অসীমের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে হাঁটতে লাগলো। অসীমের জামাকাপড় ভিজে জবজব করছে। একজায়গায় থামলো তারা, বেশ নির্জন, একটা বাড়ির ভিতরে ঢুকে এল। একটু পুরোনো বাড়ি কিন্তু বসবাসের যোগ্য। মাথাটা মুছে নাও, বেশ ভিজেছ, ঠান্ডা ব'সে গেলে জ্বর আসতে পারে....মাধবীলতা হাতের মুঠো ছেড়ে দিয়ে একটা গামছা এগিয়ে দিল। .অসীম গামছাটা নিয়ে সামনে খোলা জানালার বাইরের পুকুরটার দিকে তাকিয়ে রইল একদৃষ্টে। মাধবীলতার শাড়ির আঁচলের একটা অংশ একটু দেখা যাচ্ছে। ওদিকটায় বোধহয় কাঁটাঝোপ ছিল. কালকের মধ্যে দুটো লাশ ই ভেসে উঠবে আশা করা যায় । -------------------------------------------- ছ'য়ে ছটাক : অনুগল্প ১. জানালাটার গ্রিলের মধ্যে দিয়ে নিজের চার হাত পা বের করে দিল সে, এবার শেকল দিয়ে বাঁধার কাজ শুরু হবে। ২.আমার পেনের কালিটা ধীরে ধীরে শেষ