সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হারিয়ে যাওয়া জীবন- হিল্টন সিস্টার্স / The Lost Life Of Hilton Sister

এই গল্প হিল্টন বোনেদের, একসময়ে আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের বিনোদন জগতে সাড়া জাগিয়েছিল তারা, কিন্তু কেমন করে যেন হারিয়ে গেলো তারা, তাদের জীবনের ওঠা- পড়ার কাহিনী...

হারিয়ে যাওয়া জীবন- হিল্টন সিস্টার্স : The Lost Life of Hilton Sister
হিল্টন সিস্টার্স : image courtesy : wikimedia common 
  
 আজ যাদের গল্প শোনাবো বলে বসেছি, তারা আসলে এক রূপকথা, যা হারিয়ে যায়, আবার বারে বারে ফিরেও আসে, দেখা  আর না- দেখা জীবনকে মিশিয়ে তৈরি করে এক গল্প। আজ তাদেরই গল্প বলবো যাদের জীবন ছিল এক রঙ্গীন  স্বপ্নের মতো, আলোয় সাজানো ছিল প্রতিটি মুহূর্ত, কিন্তু শেষের সেই ভাগে লেখা হয়েছিল অসহায় একাকিত্ব।

    আপনারা হিল্টন বোনেদের নাম নিশ্চয় শুনেছেন, না না আমি প্যারিস আর নিকি হিল্টন এর কথা বলছি না। আমি বলছি ডেইজি এবং ভায়োলেট হিল্টন এর কথা। অচেনা লাগলো, তা লাগবেই, কারণ এঁদের নাম আর এঁদের  কথা জানে খুব কম লোকই। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন এঁদের  নাম লোক মুখে ফিরত। এই দুই বোনের জন্ম ৫ই ফেব্রূয়ারি ১৯০৮ সালে ইংল্যান্ড এর ব্রাইটনে।  


   এই হিল্টন বোনেদের জীবনের গল্প খুব সাদামাটা গল্প ছিল না, রূপকথা - জীবনের আলোয় লেখা ছিল কষ্ট আর বঞ্চনার ইতিহাস।এই হিল্টন বোনেরা ছিল Conjoined Twins অর্থাৎ সংযুক্ত-যমজ। তাদের আরো অনেক নামে ডাকা হতো- The Siamese Twins, The Hilton Sisters, The Brighton Conjoined Twins। এই ধরণের যমজদের শরীরের অংশ সংযুক্ত থাকে। এদের দুটো শরীর পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে- কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ শরীর সংযুক্ত থাকে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু অঙ্গ সংযুক্ত থাকে। 

     ডেইজি এবং ভায়োলেট-এর মা কেট  স্কিনার কিন্তু তার মেয়েদের  কোনোদিন মেনে নিতে পারেন নি, দোষারোপ করেছেন ভগবান কে, দোষ দিয়েছেন নিজের ভাগ্যকে-  তিনি ছিলেন অবিবাহিতা। সেই সময় চিকিৎসা বিজ্ঞান এত উন্নত ছিল না, তাই Operation অর্থাৎ ব্যবচ্ছেদ করে দুটো শরীরকে আলাদা করে এই ধরণের শিশুকে বাঁচানো কঠিন হত। এই সময় পরিত্রাতা হিসেবে এগিয়ে আসেন মেরি হিল্টন, ডেইজি আর ভায়োলেট -এর মা যে মদের দোকানে চাকরি করত তার নিয়োগকর্তা। এই মেরি হিল্টন এর পদবিই পরবর্তীতে যুক্ত হয় ডেইজি আর ভায়োলেট-এর নামের পিছনে। 

    মেরি হিল্টন কেট-কে সন্তানের জন্ম দিতে সাহায্য করে। তবে এই সাহায্য শুধু মানবিকতার খাতিরে হয়নি। এর পিছনে ছিল, তীব্র অর্থ-লালসা। তাই হিল্টন বোনেরা জন্মের পর পরেই তাদের মায়ের কাছ থেকে মেরি হিল্টন-এর কাছে চলে যায়

    
সঙ্গে হিল্টন দম্পতি : image courtesy : wikimedia common 

     
     মাকে কোনোদিনই কাছে পায়নি দুই বোন, চূড়ান্ত দারিদ্রতা সম্পত্তি হাতবদলের মতো হাতবদল করেছে ওঁদের। এরপরই হিল্টন বোনেদের জীবন শুরু হয় অন্যের হাতের কাঠের পুতুল হয়ে। বিনোদন জগতের জন্য তৈরি করা হয় এই দুই বোনকে-নৃত্য আর সংগীতের তালিম দেওয়া হতো তাদের, জ্যাজ এর তালিমও পেয়েছিল তারা। ব্রাইটনের কুইন্স আর্ম পাবে প্রথম অনুষ্ঠান করতে শুরু করে হিল্টন বোনেরা, তারপর তাদের স্থান হয় ইভিনিং ষ্টার পাবে। মেরি হিল্টন আর তার স্বামী প্রচন্ড রকমের নিয়ন্ত্রণ করত এই দুই বোনের জীবন যাত্রা। সঙ্গে চলত নিয়মিত শারীরিক নিগ্রহ। 


    আসলে প্রতিভার বিচ্ছুরণ কোনোদিনই চায়নি মেরি হিল্টন, চেয়েছে অর্থ- তথাকথিত শারীরিক অসামঞ্জস্যতাকেই  মুখ্য করে তুলেছে আর সেটা দেখিয়েই টানতে চেয়েছে দর্শক। খুব ছোট বয়স থেকেই হিল্টন বোনেরা, বলতে গেলে তিন বছর বয়েস থেকেই তারা বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতে শুরু করে,এই সূত্রে তাদের বিদেশ ভ্রমণও শুরু হয়- জার্মানি,অস্ট্রেলিয়া, এমনকি ১৯১৬ সালে আমেরিকাতেও অনুষ্ঠান করতে থাকে তারা। ''The United Twins '' নাম নিয়ে ১৯১১ সালে ব্রিটেন এ অনুষ্ঠান করে। ১৯২৬ সালে, বিখ্যাত শিল্পী বব হোপ এর সঙ্গে অনুষ্ঠান করে তারা, এই অনুষ্ঠানে প্রধানতঃ নৃত্য আর হাস্যকৌতুককে প্রাধান্য দেওয়া হতো। ১৯২০ এবং ১৯৩০ সালেও তারা আর একবার আমেরিকাতে যায় অনুষ্ঠান করতে। 
   
    মেরি হিল্টন মারা যাবার পর ডেইজি আর ভায়োলেট এর ভাগ্যের চাকা ঘুরলো এটি ভাবা ভুল, বরং তাদের জীবন হয়ে উঠেছিল আরো যন্ত্রণাদায়ক। কারন, তারা হাতবদল হয়ে এবার আশ্রিত হলো মেরি হিল্টন এর মেয়ের- এডিথ মেয়ার্স। 

    হিল্টন বোনেদের তালিম চললো শুধু বিনোদন জোগানোর জন্য। মূলতঃ, তাদের তালিম চলতো নৃত্য আর বাদ্যযন্ত্রের। ভায়োলেট বাজাত স্যাক্সোফোন আর ডেইজি বাজাত ভায়োলিন। আর এই তালিমে একটু ভুল করলেই চলত মার। এই নিগ্রহ চলেছিল বছরের পর বছর, মেয়ার্স দম্পতি তাদের আজীবন বন্দি করে রাখার ভয়ও  দেখাত। এই সবের মধ্যেই, হিল্টন বোনেদের  বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতে হত, নামতে হত বিভিন্ন সার্কাসেও, আর এই সবই হত মেয়ার্স দম্পতির করা অনুশাসনে। 



     এত জনপ্রিয়তা, এত সাফল্য কিন্তু এর আক্ষরিক অর্থে এর কোনো দামই কখনো পায়নি হিল্টন বোনেরা, তারা কোনোদিন নিজেদের রোজগারের একটা পাইপয়সাও হাতে পেত না। তারা থাকত এক বিলাসবহুল প্রাসাদে, কিন্তু তাদের জীবন -যাপন ছিল মেয়ার্স দম্পতির অনুমোদনাধীন। খ্যাতির শিখরে থাকার সময় তাদের রোজগার ছিল আনুমানিক ৫,০০০ ডলার প্রতি সপ্তাহে। ২৩ বছর বয়েসে, বন্ধু হ্যারি হুডিনির পরামর্শে তারা এই মেয়ার্স দোপাটির দাসত্ত্ব থেকে মুক্তি পায়, আর ক্ষতিপূরণ স্বরূপ পায় একলক্ষ ডলার। নতুন করে শুরু করে অনুষ্ঠান করা


     হিল্টন বোনেরা যেটাতে সবথেকে বেশি স্বচ্ছন্দ ছিল, তা হল Vaudeville-এ, এটা একধরণের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান যেখানে অভিনয়, নাচ,গান আর হাস্যকৌতুক এর সংমিশ্রণ থাকতো- আমেরিকাতে এই ধরণের অনুষ্ঠানের চলন ছিল বেশি- বিশেষত বিশের দশকের প্রথমদিকে। এই ধরণের অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই তারা দর্শকহৃদয় জয় করতে থাকে। নিজেদের নতুন করে সাজায় তারা, তাদের অনুষ্ঠানটির নাম হয়-"The Hilton Sisters' Revue", কিন্তু এই ধরণের অনুষ্ঠান ক্ৰমশঃ জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে। তারপরেই হিল্টন বোনেরা শুরু করে ''Burlesque Shows''- এটি ছিল একধরণের প্যারোডি, সাহিত্যের কোনো বিষয়কে নতুন করে তুলে ধরা হতো, হাস্যরসের মোড়কে। 


      ডেইজি আর ভায়োলেট তাদের জীবনটা কোনো একজন মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চেয়েছিলো, জীবনের সুখদুঃখগুলো কোনো একজন বিশেষ মানুষের সঙ্গেই কাটাতে চেয়েছিলো। কিন্তু প্রথম দিকে সম্ভব হয়নি সেটা, কারণ বিয়ের জন্য লাইসেন্স পায়নি তারা, সংযুক্ত থাকার কারণে একজন পুরুষ যদি ডেইজিকে বিয়ে করতো তাহলে তাকে ভায়োলেটকেও বিয়ে করতে হতো। আর এই ধরণের বিয়ে ছিল আইন-বিরুদ্ধ। ভায়োলেটের সঙ্গে সংগীতশিল্পী ল্যাম্বার্ট এর সম্পর্ক ছিল বহুদিনের, তারা বিয়ের জন্য লাইসেন্স পেতে ২১টি রাজ্যে আবেদন করে, কিন্তু পাওয়া যায় নি। পরবর্তী কালে এই সম্পর্ক ভেঙে যায়


     হিল্টন বোনেরা ইংল্যান্ড -এ অনুষ্ঠান করতে থাকে ১৯৩২ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত, তারপর তারা ১৯৩৩ সালে আমেরিকাতে চলে যায় ১৯৩২ সালে তারা অভিনয় করে একটি ফিল্মে- " Freaks''। টড ব্রাউনিং এর ফিল্ম " Freaks'' হিল্টন বোনেদের বিখ্যাত করেনি, হয়েছিল ঠিক তার উল্টোটা, আস্তে আস্তে এই ছবিটির কথা লোকে  ভুলে যেতে শুরু করে। 


      

     ১৯৪২ সালে, হিল্টন বোনেরা লেখে নিজেদের আত্মজীবনী,''The Lives and Loves of the Hilton Sisters",
  সেখানে ডেইজি লেখে: " আমরা ছিলাম বড় একা, অর্থ ছিল আমাদের, কিন্তু আমরা জীবন কাটাতাম বিত্তহীনদের মতো, সত্যি কথা বলতে গেলে আমরা ছিলাম দাসত্বের শৃঙ্খলে বন্দি। '' তিনি আরো লেখেন, '' আমি একজন নারী, আমি কোনো যন্ত্র নই, আমার একজন নারীর মতোই বাঁচবার অধিকার আছে''। 

     

     এই জবানবন্দি আসলে হারিয়ে যাওয়া অস্তিত্বের গল্প, সংকটের গল্প, যে জীবন, যে ভালোবাসা, নিজেদের জন্য যে সাফল্য রাখা ছিল, তার পূর্নতা না পাবার গল্প। 

      ১৯৫১ সালে, তাদের জীবনের উপর ভিত্তি করে দ্বিতীয় ফিল্ম তৈরি হয়, '' Chained for Life'', ১৯৫২ সালে মুক্তি পাওয়া এই ফিল্ম, কিন্তু জনপ্রিয়তা পায় না হিল্টন বোনেরা ১৯৫৫ সালে একটা হট ডগ এর দোকান খোলে, কিন্তু তাদের খ্যাতি অন্যের ব্যবসার ক্ষতি করছে এই অভিযোগে আশেপাশের ব্যবসাদারদের চাপ এ পরে হিল্টন বোনেদের দোকান বন্ধ করে দিতে হয়


বিভিন্ন সময়ের ছবি: image courtesy : wikimedia common 


সিনেমার পোস্টার :image courtesy : wikimedia common 

    ১৯৩৬ এ  ভায়োলেট বিয়ে করে অভিনেতা জেমস মুরকে, যদিও এই বিয়ে নাকি ছিল শুধুমাত্র প্রচারের জন্যই। এই বিয়ে বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, মাত্র দশ বছর স্থায়িত্ত্ব ছিল এই বিয়ের। ১৯৪১ এ ডেইজি বিয়ে করে হ্যারল্ড এস্টেপ কে, যিনি নর্তক বাড্ডি সওয়ার নামেই বেশি পরিচিত। এই বিয়েটাও স্থায়ী হয়েছিল দশ বছর। 

 হিল্টন বোনেদের জনপ্রিয়তা ১৯৫২ সালের পর থেকে আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে, এরপরেও তারা কিছু শো করে, কিন্তু কোনো শো আর আগের মতো হিট হয় না, এমনকি  হিল্টন বোনেরা তাদের শেষ শো করে ১৯৬১ সালে, শার্লোট, নর্থ ক্যারোলিনাতে। 

   এই সময়টাই হিল্টন বোনেদের বোনেদের জীবনে নেমে আসে এক দুঃসহ পরিস্থিতি। তাদের ট্যুর ম্যানেজার তাদের সেখানে, বলতে গেলে একরকম ছেড়ে দিয়ে চলে যায়, কোনোরকম যাতায়াতের সুবিধাও দেয় না, এমনকি তাদের সমস্ত অর্থ আত্মসাৎ করে

   ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এই শেষ জীবনে হিল্টন বোনেদের সঙ্গী ছিল অর্থনৈতিক অস্বাচ্ছন্দ আর একাকিত্ব। শেষ জীবনে রোজগারের আশায় হিল্টন বোনেরা কাজ নেয়  একটা মুদি দোকানে। বাকি জীবন খুব সাধারণ ভাবে কাটিয়ে দিয়েছিলো তারা। 

১৯৬৯ সালের ৪ই জানুয়ারী, হিল্টন বোনেরা কাজে আসেনি- মুদি দোকানের মালিক পুলিশকে খবর দেয়।পুলিশ যায় তাদের বাড়িতে, দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় তাদের মৃত্ শরীর। তদন্তে জানা যায়, ডেইজি প্রথমে মারা গেছিলো, ভায়োলেট মারা যায় তারপরেই। বলা হয় জ্বর-এ মারা গেছে দুজনে। তাদের সমাধি দেওয়া হয় ফরেস্ট লন সিমেট্রি, শার্লট এ

হিল্টন বোনেদের শরীরের পিছনের অংশটি ( বলতে গেলে নিতম্বের অংশটি) একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল, তাদের পেলভিসটি যুক্ত ছিল একই সঙ্গে, তাই তাদের রক্ত সঞ্চালন এর পথটি ছিল একই, এছাড়া আর কোনো অঙ্গ -সংযুক্তি  ছিল না তাদের মধ্যে। বলা হয়, একটা অপারেশন করলেই তারা আলাদা আলাদা জীবন পেত, আলাদা আলাদা হয়ে যেত তাদের শরীর দুটো। কিন্তু তারা চায়নি তা, ডেইজি এবং ভায়োলেট চেয়েছিল একসঙ্গে থাকতে, সারাজীবন, হাতে হাত ধরে একসঙ্গে একটাই জীবন চেয়েছিল তারা। 
ডকুমেন্টারি :image courtesy : wikimedia common 


পরবর্তীতে ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মাতা আমেরিকান অভিনেতা রবার্ট জেমেকিস এর স্ত্রী লেসলি জেমেকিস একটি ডকুমেন্টারি ছবি তৈরী করেন, '' Bound by  Flesh''- হিল্টন বোনেদের উপর।  এই ছবিটিতে আলোকপাত করা হয়েছে হিল্টন বোনেদের জীবনের বিভিন্ন দিকগুলিতে, তুলে ধরা হয়েছে তাদের জীবনযাত্রাকে, তাদের হারিয়ে যাওয়া জীবনের কথা ফিরে ফিরে  এসেছে,হিল্টন বোনেদের সহকর্মী ছিল এমন অনেক মানুষের সাক্ষ্যাৎকারে উঠে এসেছে হিল্টন বোনেদের জীবনের অনেক গল্প। 

আনলে নেভিৎজ এই ডকুমেন্টারী ফিল্মটি সম্বন্ধে বলেছে, জেমেকিসের ফিল্ম- ''Bound By Flesh" শুধুমাত্র একটা দুখঃজনক কাহিনী হয়েই থাকে নি, বঞ্চনার অনেক সত্যি কোথায় এখানে প্রকাশ পেয়েছে, কিন্তু তার থেকেও বেশি গুরুত্ত্ব পেয়েছে আমেরিকার বিনোদন জগতে হিল্টন বোনেদের অবদান। যে অসামান্য ও অনন্য মুহূর্তগুলি রেখে গেছে হিল্টন বোনেরা, তাদের সংগীতের মাধ্যমে তা তাদের করেছে অমর। তিনি আরো বলেছেন, হিল্টন বোনেরা যেন ছিলেন ''YouTube stars of the 1920s'', যা লক্ষ লক্ষ অনুরাগীকে বছরের পর বছর অমোঘ আকর্ষনে বেঁধে রেখেছিল।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

এডগার অ্যালান পো সিরিজ ১ l Edgar Allan Poe Series

এডগার অ্যালান পো এর "দ্য মার্ডারস ইন দ্য রু মর্গ"- “The Murders in the Rue Morgue” গোয়েন্দা গল্পের প্রথম আত্মপ্রকাশ হল এবং যাত্রা শুরু হল গোয়েন্দা কাহিনীর।  এডগার অ্যালান পো: Image Courtesy : pixabay  ১৮৪১ সালের প্রথম দিক তখন, এডগার অ্যালান পো (Edgar Allan Poe) ফিলাডেলফিয়ার এক জনপ্রিয় প্রকাশনা গ্রাহামস ম্যাগাজিনের (Graham’s Magazine) সম্পাদক হিসাবে কাজ করছেন, পত্রিকায় একটি গল্প জমা দিয়েছিলেন, বহু খেটে গল্পটি লিখেছেন পো, যার নাম ছিল "মার্ডার্স ইন দ্য রু ট্রায়ানন " - “Murders in the Rue Trianon.” প্যারিসের রাস্তার পাশে একটি বাড়িতে একটি ভয়ঙ্কর জোড়া-খুনের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী নিশ্চিত করেছেন যে বাড়ি থেকে একজনের কণ্ঠস্বর শোনা গেছে, তবে একজন বক্তা ঠিক কী ভাষা ব্যবহার করছেন সে বিষয়ে কেউ একমত হতে পারছে না। ভাষার ধাঁধায় গুলিয়ে যাচ্ছে গোটা ঘটনা। বেশ কিছু ক্লুও পাওয়া গেছে, কিন্তু সেগুলো প্রতিটি পরবর্তীটির চেয়ে আরও বিভ্রান্তিকর। প্রতিবেশীরা আতঙ্কিত। পুলিশ বিভ্রান্ত। কিন্তু সি. অগাস্ট ডুপিন (C. Auguste Dupin) একজন শেভালিয়ার (chevalier) এব

বাংলা অণুগল্প- অনুগল্প সিরিজ /Bengali Story

অসীম আর মাধবীলতা অসীম.....এই যে এই দিকে, মাধবীলতা আবার ডাক দিলো,....... হ্যাঁ একদম ঠিক যাচ্ছ,......আমার হাতটা লক্ষ্য করে আস্তে আস্তে এগিয়ে এস, না না ওদিকে নয়.......ওদিকে কাঁটার ঝোপ......গায়ে ফুটে গেলে কেলেঙ্কারির একশেষ.....মাধবীলতা আর ভরসা রাখতে পারলো না, নিজেই এগিয়ে গিয়ে অসীমের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে হাঁটতে লাগলো। অসীমের জামাকাপড় ভিজে জবজব করছে। একজায়গায় থামলো তারা, বেশ নির্জন, একটা বাড়ির ভিতরে ঢুকে এল। একটু পুরোনো বাড়ি কিন্তু বসবাসের যোগ্য। মাথাটা মুছে নাও, বেশ ভিজেছ, ঠান্ডা ব'সে গেলে জ্বর আসতে পারে....মাধবীলতা হাতের মুঠো ছেড়ে দিয়ে একটা গামছা এগিয়ে দিল। .অসীম গামছাটা নিয়ে সামনে খোলা জানালার বাইরের পুকুরটার দিকে তাকিয়ে রইল একদৃষ্টে। মাধবীলতার শাড়ির আঁচলের একটা অংশ একটু দেখা যাচ্ছে। ওদিকটায় বোধহয় কাঁটাঝোপ ছিল. কালকের মধ্যে দুটো লাশ ই ভেসে উঠবে আশা করা যায় । -------------------------------------------- ছ'য়ে ছটাক : অনুগল্প ১. জানালাটার গ্রিলের মধ্যে দিয়ে নিজের চার হাত পা বের করে দিল সে, এবার শেকল দিয়ে বাঁধার কাজ শুরু হবে। ২.আমার পেনের কালিটা ধীরে ধীরে শেষ

একটি প্রেমের গল্প : অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি / The love story of Amrita Pritam and Sahir Ludhianvi

প্রেমের গল্প। প্রেম ভাঙার গল্প। পাত্র-পাত্রী সাহির লুধিয়ানভি এবং অমৃতা প্রীতম। দিকপাল দুই সাহিত্যিক। কেমন ছিল সেই সম্পর্ক ? ''আমি তো জানতাম সাহির, তোমার কোনোদিনই আমার প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষার কোনো দায় ছিল না । কি যেন বলে আজকাল ! ও হ্যাঁ , কমিটমেন্ট ফোবিয়া।  ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে কি না সেই দ্বিধাতেই তো রয়ে গেলে। কেন  যেন মনে হয় আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা  সেই গভীরতর  অতলান্ত  স্পর্শ করে নি কোনোদিন। ছুঁয়ে দেখেনি সেই ভালোবাসার তীব্র টানকে। আচ্ছা সত্যি করে বলো তো, তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবেসেছ  ? যতটা আমি তোমাকে বেসেছি।  "ম্যায়নে টুট  কে প্যায়ার কিয়া তুম সে / ক্যায়া  তুমনে ভী উতনা কিয়া মুঝ সে?'' অমৃতা প্রীতম এবং সাহির লুধিয়ানভি : Image Courtesy : Indian Express  ' ''মোহাব্বত কি পরখ  কা  ইয়েহি  তো রাস্তা  হ্যায় / তেরি  তালাশ মে নিকলু, তুঝে  না  পায়ু  ম্যায় '' । অমৃতা ভালোবাসা খুঁজেছেন, সেই আকুল করা ভালোবাসা,  হৃদয় তন্ত্রীতে সেই তীব্র ঝড় তোলা ভালোবাসা তাকেই তো খুঁজেছেন অমৃতা। পেয়েছেন কি ? খুঁজবো আমরা।  উপরের লাইনদুটি মজহা